তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের রিয়াদ হোসাইন নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে আটটায় কুষ্টিয়া শহর থেকে আসা বাস থেকে নামার পর ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সোমবার রাতে ক্যাম্পাসের বাসে উঠে সামনের দিকের সিটে বসতে যাওয়ার সময় বাসে দাঁড়িয়ে থাকা ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগকর্মী সামিউল ইসলাম আমাকে সামনে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে। এসময় সামনে সিট ধরা আছে জানালে ভেতর দিয়ে না গিয়ে নেমে অন্য দরজা দিয়ে উঠতে বলে। তার কথা না নেমে ভেতর দিয়ে সামনে যেতে চাইলে সামিউল ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজনের রেগে গিয়ে আমাকে তুই তোকারী শুরু করে ও ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে রাতে বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে থামলে রিয়াদ নামামাত্রই তারা তার উপর চড়াও হয়। এসময় সামিউল তার জামার কলার ধরে মারধর শুরু করেন। এসময় তার সাথে থাকা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম তরুন, সিয়াম, নাবিলসহ ৭-৮ জন তাকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। পরে ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস কি আর হতে পারে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করলো। আমি তাদের সকলের বিচার চাই।’
এবিষয়ে অভিযুক্ত সামিউল বলেন ‘বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভিতর দিয়ে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বোঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারো তর্কে লিপ্ত হয়। এসময় ও ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধমকি দেইনি।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি বাসে কথা কাটাকাটির পর ক্যাম্পাসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউলদের উপর চড়াও হয়। এতে ধস্তাধস্তি হয়। এখন আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।’
এবিষয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তর বক্তব্য শুনে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবো।’
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ