ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাঠ্যবইয়ের ভুল স্বীকার করে সংশোধনী এনসিটিবি’র

প্রকাশনার সময়: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:০৯

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নতুন বছরের পাঠ্যবইয়ের ভুল স্বীকার করে সংশোধনী দিয়েছে। নবম-দশম শ্রেণির তিনটি পাঠ্যবইয়ের এ সংশোধনী দেয়া হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) অধিদপ্তর থেকে সব জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং পৌরনীতি ও নাগরিকতা পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে এনসিটিবির দেয়া এসব বইয়ের সংশোধনী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিভাবকের কাছে পৌঁছানো ও স্কুলগুলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে সব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি এ তিনটি বইয়ের বেশ কয়েকটি ভুল সংশোধন করে তা প্রকাশ করেছে এনসিটিবি।

নবম ও দশম ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বইয়ের চারটি ভুল সংশোধন করা হয়েছে। বইটির ১৮১ পৃষ্ঠায় বলা ছিলো, ‘১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নির্যাতন, গণহত্য ও ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে’। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নির্যাতন, গণহত্য ও ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে’।

একই বইয়ের ২০০ নম্বর পৃষ্ঠায় আছে, ‘১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহম্মদ সায়েমের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন’। এ অংশটি সংশোধন করে বলা হয়েছে, ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

ওই বইয়ের ২০২ পৃষ্ঠায় বলা ছিলো, সংবিধান প্রণয়ন ১৯৭২ এর পটভূমি অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের পরে যুক্ত হবে। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সংবিধান প্রণয়ন ১৯৭২ এর পটভূমি অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের পর যুক্ত হবে- সংবিধান প্রণয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছিলো। সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সার্বক্ষণিক দিক নির্দেশনা ছিলো। তিনি সংবিধান কমিটিকে বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে প্রত্যক্ষ নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

ওই বইয়ের ২০৩ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, পঞ্চমভাগে জাতীয় সংসদ। ওই অংশের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ লাইনে ‘পঞ্চমভাগে আইনসভা’।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইতে তিনটি সংশোধনী দেয়া হয়েছে। এ বইয়ের ৬ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে চারটি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল চারটি হলো- আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম ও গণতন্ত্রী দল। এ অংশের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের ৫টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল পাঁচটি হলো- আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি নেজামে ইসলাম, গণতন্ত্রী দল ও পাকিস্তান খেলাফতে রব্বানী পার্টি।

একই বইয়ের ১৬ পৃষ্ঠায় বলা আছে, ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প ও পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প। ওই অংশের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স ও পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর। ওই বইয়ের ২৮ পৃষ্ঠায় বলা আছে, সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ এ সংবিধানের বৈশিষ্ট।

নবম-দশম শ্রেণির পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের বইয়ে দুইটি দিক সংশোধন করা হয়েছে। বইয়ের ৫৭ পৃষ্ঠার রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কাজ এর ১ নম্বর অনুচ্ছেদটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কাজ এর ১ ক্রমিকের অনুচ্ছেদের প্রতিস্থাপিত হবে, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান। সরকারের সব শাসন সংক্রান্ত কাজ তার নামে পরিচালিত হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া তার দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরমর্শ অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করেন। তিনি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের নিয়োগ করেন। রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের (মহা-হিসাবরক্ষক, রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা) নিয়োগের দায়িত্বও রাষ্ট্রপতির। প্রতিরক্ষ কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। তিন বাহিনীর (সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী) প্রধানদের তিনিই নিয়োগ দেন।

ওই বইয়ের ৫৯ পৃষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কাজ-১ ক্রমিকের অনুচ্ছেদটি প্রতিস্থাপিত হবে। এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিপরিষদের প্রধান। প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা নির্ধারণ করেন ও মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেন। তিনি যেকোনো মন্ত্রীকে তার পদ থেকে অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ