বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিঃসন্দেহে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। প্রথমদিন থেকে শুরু করে চার বছরের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস, পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্টের গ্যাড়াকলে কখন যে জীবনের সেরা সময় পার হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না। হুট করে ডিসেম্বরের ঘন্টি বিদায় বেলার জানান দিয়ে যায়। তাই শেষবেলাটা রঙিন করে তুলতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ও ৭ম ব্যাচ।
১৭-১৮ ডিসেম্বর ‘ছিনিয়ে আনবো জয়, আমরা এক ছয়’ স্লোগানে অদ্রিত-১৬ এবং ২৮-২৯ ডিসেম্বর ‘সত্ত্বার সন্ধিক্ষণে সাহসী পদার্পণে’ প্রতিপাদ্যে সাত্ত্বিক- ৭ বিদায়ের পূর্ব মুহূর্তগুলোকে মনের পর্দায় অমলিন করে রাখতে কালার ফেস্ট, কালচারাল নাইট, কনসার্ট, র্যাগ ওয়্যাল, পেইন্টিং ইত্যাদির আয়োজন করে।
লাল-নীল-হলুদ রঙে ক্যাম্পাস সাঁজে, ক্যাম্পাসের সন্তানরা সাঁজে, সাদা টি-শার্টে পুরনো আবেগ ফুটে উঠে। মধুময় দিনগুলোর স্মৃতি হৃদয়ের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে আনন্দে, উচ্ছ্বাসে, স্লোগানে, রংখেলায় ও কনসার্টে যখন উৎসবমুখর ক্যাম্পাস তখন পিছনের দিনগুলো মনে করে অশ্রুতে ভারি চারপাশ। এই আনন্দঘন মুর্হূত ফুটিয়ে তুলে স্নেহ-মমতার এক অদৃশ্য শক্তি। ভুলিয়ে দেয় দেনা-পাওনা, বিদ্বেষ আর রাগ অভিমান।
আয়োজকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের দিন থেকে নানারকম মানুষ মিলে তৈরি হয় একটি ব্যাচ। চারবছরে হাজারো গল্প- স্মৃতি সংকলনের মাধ্যমে জীবনের একটি অধ্যায় রচিত হয়। আর জমানো সব গল্পকে স্মৃতিপটে ধারণ করে রাখতে বেলাশেষে নীড়ে ফেরা পাখিদের বিদায়ের প্রস্তুতি নেয়ার উদ্দেশ্যে এই আয়োজন। অসংখ্য স্মৃতি, ভালোবাসা আর প্রিয়জনদের বিয়োগের শূন্যতা নিয়ে বিদায়ের যাত্রা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী শামস জেবিন বলেন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ঊর্ধ্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভালবাসাটা সবসময় অমলিন থাকবে। এই আনুষ্ঠানিকতা ও উৎসবমুখর পরিবেশ সাময়িক খুশি দিলেও বিয়োগের শূন্যতা সারাজীবন থেকে যাবে।
ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল শেখ বলেন, বিদায় বলতে আসলে মন থেকে কাউকে বিদায় দেওয়া যায় না। আজ সিনিয়র ভাই বোনেরা চলে যাচ্ছেন আগামী বছর আমাদেরও চলে যেতে হবে। আর এই চলে যাওয়া আনন্দময় ও স্মৃতিবিজরিত করে রাখতে কালার ফেস্টিভ্যাল ও কনসার্টের আয়োজন, যেন দিনশেষে
আপন মানুষরা হাসিমুখে উদযাপন করতে পারেন।
৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী জান্নাতী রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর নতুন একটা জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নেয়া কষ্টকর ছিলো। তবে সেই কষ্টকে খুব দ্রুতই কাটিয়ে উঠতে যারা পাশে ছিলো তাদেরসহ প্রাণের ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় এসেছে। ভাবতেই অনেক খারাপ লাগছে। হয়তো আজকের পর থেকে নিজের মতো করে ক্যাম্পাসে ফেরা হবে না। তবে দূর থেকে পুরনো দিনগুলো মিস করবো।নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ