বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) জি.এম.এ.জি ওসমানী হলে একের পর এক সাইকেল চুরির অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে যোহরের নামাজের সময় হলের ১০১২ নাম্বার রুমের সামনে থেকে বুটেক্সের ৪৫তম ব্যাচের পিয়াস নামের এক শিক্ষার্থীর সাইকেলটি চুরি হয়।
এর আগে ৫ ডিসেম্বর ৪৫তম ব্যাচের হাসিবের সাইকেলটিও ১০১৩ নাম্বার রুমের সামনে থেকে নিয়ে যায় চোর। তার আগে ২১ নভেম্বর হলের সাইকেলের গ্যারেজ থেকে ৪৩তম ব্যাচের রফিক নামের আরেক শিক্ষার্থীর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। এর আগে রাসেল, অনুপম, মোস্তাফিজ নামে তিন শিক্ষার্থীর সাইকেল চুরি হয়। এসব শুধুমাত্র গত ৪ মাসের তথ্যচিত্র।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পিয়াসের অভিযোগ, একটা সিন্ডিকেট এই চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। হলের ভেতরে টং দোকান এবং ক্যান্টিনে খাওয়ার অযুহাত দিয়ে তারা হলে প্রবেশ করে। এরপর ওয়াশরুম ব্যবহারের জন্য ১০১১-১০১৪ নাম্বার রুমের ব্লকে গেলে সেখান থেকেই সাইকেল নিয়ে যায়। তাছাড়া মাস কয়েক আগে ১০১২ নাম্বার রুম থেকে একটি আইফোন খোয়া যায়।
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী হাসিবের অভিযোগ, হলের নিরাপত্তারক্ষীরা অবৈধ বহিরাগত প্রবেশে বাধা দেয় না। একদিন বহিরাগত এক ব্যাক্তি হলে প্রবেশ করলে আমরা বাধা দেই, পরে হারেস নামে এক নিরাপত্তারক্ষী তার পরিচিত বলে ওই ব্যাক্তিকে ঢুকতে দেয়। এভাবেই কত পরিচিত-অপরিচিত লোক প্রবেশ করছে তা হিসেবের বাইরে।
হলের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, হলের ভেতরে টং দোকানে, ক্যান্টিন এবং মাঠে প্রতিদিন বহিরাগতরা প্রবেশ করে। বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হল প্রশাসন অনেকবার উদ্যোগ নিলেও সফল হয়নি। যার ফলস্বরূপ চুরির মতো ঘটনা হরহামেশা ঘটেই চলছে। যেমন আজকে সকাল ৭ টা ২১ মিনিটে উচ্চস্বরের সাউন্ড এর কারণে ঘুম ভেঙে যায়, পরে মাঠে আমরা গিয়ে বাধা দিলে, তারা জানান আমরা টাকা দিয়ে এইখানে খেলতেছি।
এই বিষয়ে হল প্রভোস্ট, ড. মো. সামিউল ইসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, হলে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে হলে হলের ভেতরের টং দোকান, খেলার মাঠ ও ক্যান্টিনে বহিরাগতদের অবৈধ প্রবেশ রোধ করতে হবে। তাহলেই চুরি ঠেকানো সম্ভব।
নিরাপত্তারক্ষী হারেসের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, হারেসের দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাকে পরিবর্তন করে ইউনিভার্সিটিতে দেওয়া হয়েছিল। কোনো এক অজানা কারণে সে আবার হলে চলে আসে। কঠোরভাবে চুরি ঠেকাতে হলে যাদের সাইকেল আছে সবাইকে কার্ড বানিয়ে গ্যারেজে সাইকেল রাখার অনুরোধ জানান প্রভোস্ট।
হল ম্যানেজার আইয়ুব বলেন, হারেস আমাদের কথা শোনে না। সে দৈনিক ৮ ঘন্টার জায়গায় ১৬ ঘন্টা ডিউটি করে বেশি টাকা পাওয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু সেখানে সে অতিরিক্ত দায়িত্বের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটায়।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টা নাগাদ সরেজমিনে সিকিউরিটি রুমে গেলে এই অভিযোগের সত্যতা মেলে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় নিরাপত্তারক্ষী হারেস ঘুমাচ্ছেন।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ