ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লক্ষ্য এবার পশ্চিম ইউরোপের ইংলিশ চ্যানেল!

প্রকাশনার সময়: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২, ২২:০৫

সাগরের উত্তাল জলরাশির বুক চিরে, উন্মাতাল ঢেউয়ের বাধা পেরিয়ে, কুয়াশা ও বাতাসের প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে সম্প্রতি টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার সমুদ্রপথ সাঁতরে পার হন মো. সালাহ উদ্দিন। অর্জন করেন ৪র্থ স্থান। এর আগে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে সাঁতরে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়ার কৃতিত্বও তার। মো. সালাহ উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলায়। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট।

ছোটবেলা থেকেই সাঁতারের প্রতি ঝোঁক ছিলো সালাহ উদ্দিনের। ছেলের দুরন্তপনা আর সাহসে ভয় পেতেন মা-বাবা। তবে ছেলের সন্ধি জলের সঙ্গে। অগত্যা সাহসই দিয়ে গেলেন সবসময়। ২০১২ ও ২০১৩ সাল, সালাহ উদ্দীন তখন মাধ্যমিকের ছাত্র। আন্তঃবিদ্যালয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ৩য় হয়েছেন দুইবার। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে তার অর্জনের তালিকা। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁতার প্রতিযোগিতায় পেয়েছেন স্বর্ণপদক। ১০০ মিটার ও ২০০ মিটার সাঁতার প্রতিযোগিতার ইভেন্টে ২০১৭ সালে পেয়েছেন দুটি স্বর্ণপদক। একই বছর ওয়াটার ফ্লো ইভেন্টেও চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে সাঁতরে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়ার গৌরব অর্জন করেন মো. সালাহ উদ্দিন।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার সাঁতার কেটে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন তিনি। ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সটিম বাংলার আয়োজনে এবার বাংলা চ্যানেল সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ৩৫ জন প্রতিযোগী। সালাহ উদ্দিন হয়েছেন চতুর্থ।

নয়া শতাব্দীর সঙ্গে আলাপকালে সাঁতার ঘিরে নানা পরিকল্পনার কথা জানান সালাহ উদ্দিন। সমুদ্রের জলে ভেসে, সাঁতার কেটে গড়তে চান রেকর্ড। সাঁতারের বিশ্বমঞ্চে লাল সবুজের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখেন। সালাহ উদ্দিন জানান, স্পন্সরশিপ পেলে নতুন বছরে অংশগ্রহণ করতে চান থাইল্যান্ডের ওশেনম্যান সাঁতার প্রতিযোগিতায়।

তবে, এখানেই স্বপ্নের সীমারেখা থামবে না সালাহ উদ্দিনের। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী জানান, ভবিষ্যতে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে চান তিনি। সেজন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে দক্ষ সাঁতারু হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাকটিস করছেন নিয়মিত। নিজেকে যাচাই করার জন্য একই দিনে দুইবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেবার পরিকল্পনাও রয়েছে তার। সালাহ উদ্দিন জানান, সাঁতারকে ঘিরে নানা অর্জনের পথে এখন পর্যন্ত তাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে রাঙামাটি জেলা পরিষদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন পূরণে প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা চান সালাহ উদ্দিন।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ