ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শীতের বাজারে দামের উত্তাপ

প্রকাশনার সময়: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ০৮:১৫

প্রকৃতিতে শীতের আগমনি বার্তা অনুভব করা যাচ্ছে গত কয়েক দিন ধরেই। এরই মধ্যে রাজধানীর বাজারে শীতকালীন শাকসবজি আসা শুরু করলেও দাম ব্যাপক চড়া। চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, চিনি, ছোলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস ক্রেতাদের।

প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছেই, তাই বাজারে গিয়ে অস্বস্তির আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে গতকাল শুক্রবার এ চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে তেল ও চিনির দাম বাড়িয়ে নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ দুই পণ্য ও চাল বাদে বাকি পণ্যগুলো পুরোটা আমদানিনির্ভর। সেগুলো পণ্যের দাম নির্ধারিত না থাকায় দফায় দফায় বাড়ছে। আর মৌসুম শেষে সরবরাহ কমতে থাকায় বাড়ছে চালের দাম।

বাজারে মোটা চাল কেজিতে বেড়েছে ২-৩ টাকা। প্রতি কেজি সাধারণ মানের পাইজাম বা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২ থেকে ৫৮ টাকা। আর মাঝারি মানের চাল কিনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও ভালো মানের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার ওপরে।

প্যাকেট আটায় ৪ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৭০ টাকায় ঠেকেছে। প্যাকেট ময়দায় দাম ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৮০ টাকা হয়েছে। খোলা আটা কেনা যাচ্ছে ৬৫ টাকায়, আর ময়দা ৭৫ টাকায়।

ভোজ্যতেল ও চিনির বাড়তি দাম বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন দামে এক লিটারের বোতল সয়াবিন তেল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ছিল ১৭৮ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতল সয়াবিন তেলের নতুন দাম ৯২৫ টাকা। আগে ছিল ৮৮০ টাকা। খোলা সয়াবিনের নতুন দামে প্রতি লিটার ১৭২ টাকা। এতদিন ছিল ১৫৮ টাকা।

১৩ টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দামে। কোথাও কোথাও কিছুটা কম দামে ১১৫ টাকায় চিনি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বেড়ে চলেছে প্রায় সব ধরনের ডালের দাম। নতুন করে বাড়ছে ছোলার দামও। খোলা বাজারে মসুর ডালের কেজি মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলার প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারে গত এক সপ্তাহের বাজারদর তুলনা করলে দেখা যায়, সবজির মধ্যে শিমের দাম কমেছে। দুই সপ্তাহ আগেও নগরীতে শিম বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ টাকায়। এই সপ্তাহে শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। শিমের দাম কমলেও বেড়েছে অন্যান্য সবজির দাম। বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। করলা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা ও শসা ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে শিয়া মসজিদ বাজারের সবজি বিক্রেতা মামুন বলেন, ‘দাম তো বাড়তি। আড়তে দাম না কমলে আমগো কিছু করার নাই।’ একই কথা জানালেন কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা আনারুল ইসলাম। বলেন, ‘শীতের সবজি এখনও সব আসে নাই। সব যখন আসব, তখন দাম কিছুটা কমতে পারে।’

বাজারে ৭০ টাকার কমে রয়েছে শুধুই পেঁপে। বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। সবজির বাজারে চাল কুমড়ার পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে, লাউ আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, মিষ্টি কুমড়ার ফাঁলি ৩০ টাকা। কিছুটা কমেছে বাঁধাকপি ও ফুলকপির দাম। বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস দরে। বাজারে কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কাঁচাকলার হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, মুলা ৪০ টাকা কেজি।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, পাঙাশ মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০, কাঁচকি প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, কাতলা ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা ও শিং ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা ৪০০ টাকা, টাকি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, শোল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, রূপচাঁদা ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, জাটকা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, এক কেজির ইলিশ ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা ও দেড় কেজির ইলিশ ১৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

কয়েকটি মাংসের বাজারে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির প্রতিকেজি ১৭০, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০, কক ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস প্রতি কেজিতে ৯০০ থেকে ১০০০, গরু মাংস ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ