ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বড় ঝুঁকিতে অর্থনীতি

প্রকাশনার সময়: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৩৩

ডলার সংকট ও মূল্যস্ফীতি এখন চরমে। কমেছে প্রবাসী ও রফতানি আয়। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমায় ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়া বেড়েছে। ব্যাংকে তারল্য সংকট। কৃচ্ছ্রসাধনের পরও আমদানি খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। রিজার্ভ কমে তলানিতে। রিজার্ভ ঠিক রাখতে বিদেশি ঋণ খুঁজছে সরকার।

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে চাপে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণেও ছন্দপতন ঘটেছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও রয়েছে সংশয়। এদিকে, বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাঙতে পারছে না অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।

সুযোগ পেলেই তারা কারসাজি করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্ভাব্য সংকট তো আছেই।ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। এসবের মধ্যে যোগ হয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতি বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলতি অর্থবছরে অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার ও দেশের বাজারে অস্বাভাবিকহারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে। ডলার সংকট, রফতানি আয়, প্রবৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, আমদানি বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে চলতি হিসাবে ঘাটতি বড় আকার ধারণ করছে। এ ছাড়া আর্থিক খাতের দুর্দিনও চলছে। এসব নিয়েই ভালো নেই দেশের অর্থনীতি।

দেশের অর্থনীতিতে মোড়লের দায়িত্ব পালন করছে ব্যাংক। কৃষি, সিএসএমই থেকে শুরু করে বড় শিল্পখাত বা অস্থিতিশীল পুঁজিবাজার—সবাই তাকিয়ে ব্যাংকের দিকে। সরকারের ঘোষিত নানা প্রণোদনা প্যাকেজও এই ব্যাংকের ওপরই নির্ভরশীল। সরকার তার সবকিছুতেই এখন এই ব্যাংকের ওপর নির্ভর করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নানামুখী চাহিদা পূরণ করতে ব্যাংকখাতের ওপর বিপদ বেড়েছে। ফলে অর্থনীতিতেও ঝুঁকি বাড়ছে। ব্যাংক ব্যবস্থার শৃঙ্খলা ভেঙে পড়লে গোটা অর্থনীতিই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশের বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৫১ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংক খাত থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার ৫১৩ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে সরকারও। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকগুলো এ ঋণ বিতরণ করেছে।

এর মধ্যে কোনো কোনো ঋণের মেয়াদ ২০-২৫ বছর পর্যন্ত দীর্ঘ। যদিও দীর্ঘমেয়াদি এসব ঋণ বিতরণ করা হয়েছে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া স্বল্পমেয়াদি আমানত থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানতের অন্তত ৮০ শতাংশের মেয়াদ অত্যন্ত স্বল্প। এসব আমানতের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন বছর।

করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে থেকেই খেলাপি ঋণ নিয়ে বিপদে ছিল দেশের অর্ধেকের বেশি ব্যাংক। তবে মহামারী দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকের জন্যই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিসহায়তার কারণে গত দুই বছর কিস্তি আদায় না করেও ঋণ নিয়মিত দেখাতে পেরেছে ব্যাংকগুলো। নীতিসহায়তার মেয়াদ শেষ হতেই ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির অবনতি হওয়া শুরু করেছে।

চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এরপর খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি ঋণ পুনঃতফসিল নীতিমালায় উদারীকরণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষমতা ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দেয়ার পাশাপাশি ডাউনপেমেন্টের পরিমাণও অস্বাভাবিক হারে কমিয়ে আনা হয়েছে।

গত এক বছরে ১০ বিলিয়নের বেশি রিজার্ভ কমেছে। বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচকের বর্তমান পরিমাণ ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া রাজস্ব আহরণে ছন্দপতন ঘটেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আয়ে উলম্ফন হলেও সেপ্টেম্বরে তা কমে গেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে আলোচ্য অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণে ছন্দপতন ঘটেছে।

এনবিআরের তথ্য মতে, গত মাসে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর ও কাস্টমস শুল্ক মিলিয়ে এনবিআরের রাজস্ব আদায় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.৬৭ শতাংশ। অথচ আগের দুই মাসে গড়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছিল প্রায় ১৯ শতাংশ হারে। অবশ্য জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের কিছুটা বেশি।

এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৬ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে, ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের এর পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা।

বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনীতির (ম্যাক্রো ইকোনমি) মূল সূচকগুলোর বেশিরভাগই নিম্নমুখী। গত সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় কমেছে, চলতি অক্টোবরে আরও বেশি হারে কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সেপ্টেম্বরে আমদানির পাশাপাশি কমেছে রেমিট্যান্সও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ জুলাই ও আগস্টের তুলনায় কম। আলোচ্য দুই মাসে ২ বিলিয়ন করে রেমিট্যান্স এলেও অক্টোবরের ২০ দিনে এসেছে ১ বিলিয়ন ডলারের মতো। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি ও মজুরি বৃদ্ধির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।

এতে দেখা যায়, গত জুনেও মূল্যস্ফীতির হার জাতীয় পর্যায়ে মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি ছিল। আগের চার মাসেও একই চিত্র ছিল দেশে। সাধারণ সময়ে মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির কিছুটা বেশি থাকে। তবে অর্থনীতির এই পরিচিত প্রবণতায় ছেদ ঘটেছে ফেব্রুয়ারি থেকে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, আর মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ, মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ১৫। পরের মাস এপ্রিলে মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছিল ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। মে মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, মজুরি বেড়েছিল ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

জুন মাসে দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর সূচক মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশে ওঠে, যা ছিল ৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিপরীতে ওই মাসে মজুরি সূচক বেড়েছিল ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশে নেমে আসে; ওই মাসে মজুরি সূচক ছিল ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগস্টে মজুরি সূচক বেড়ে ৬ দশমিক ৮০ শতাংশে ওঠে। মূল্যস্ফীতি এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।

অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরোর মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন আছে। বিবিএসের সঙ্গে সঙ্গে বাজারের পণ্যমূল্যের বাস্তব প্রতিফলন পাওয়া যায় না।’

আহসান মনসুর বলেন, ‘৫৫ টাকার কমে কোনো চাল পাওয়া যায় না বাজারে। ভোজ্যতেল, চিনি, ডালসহ সব জিনিসের দামই চড়া। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে পণ্যমূল্যে। বেড়েছে মানুষের পরিবহন খরচ।’

ঊর্ধ্বগতিতে থাকা দেশের রফতানি আয় এবার হোঁচট খেয়েছে। প্রায় ১৩ মাস পর দেশের রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। সদ্য শেষ হওয়া সেপ্টেম্বর মাসে রফতানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। মাসটিতে বাংলাদেশ রফতানি করেছে ৩৯৫ কোটি ডলারের পণ্য।

ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত অর্থাৎ সাড়ে তিন মাসে (১ জুলাই থেকে ১৬ অক্টোবর) ব্যাংক থেকে সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। গত বছরের একই সময়ে নিয়েছিল পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো।

রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে আসায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে বাধ্য হয়ে সরকারকে ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। এ ছাড়া আমদানি এবং সুদ পরিশোধসহ অন্যান্য খাতে সরকারের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ঋণ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ বলে জানিয়েছেন তারা।

ব্যাংক আমানতের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে ক্রমবর্ধমান পণ্যমূল্য। কারণ জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় খরচ মেটানোর পর মানুষের হাতে বলতে গেলে ব্যাংকে রাখার মতো টাকাই থাকছে না। সংসারের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমানতের টাকা ভেঙে খাচ্ছেন অনেকে।

এর ওপর ডলার ক্রয়ে ব্যাংকগুলোর ব্যয় এবং বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ দুটোই বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং সিস্টেমে ব্যাপক তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট উত্তরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে স্বল্প সময়ে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের টাকা ধার নেয়া ‘কল মানি রেট’ অধিক পরিমাণ বেড়েছে।

বাংলাদেশের ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, চলতি বছরের আগস্টে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৮ শতাংশ কমে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও মেয়াদি আমানত (টাইম ডিপোজিট) ও চাহিদা আমানত (ডিমান্ড ডিপোজিট) কমছে।

মেয়াদি আমানতের অর্থ একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। অন্যদিকে চাহিদা আমানতের অর্থ কোনো নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত জমা রাখার বাধ্যবাধকতা নেই; চাহিদা আমানত থেকে যে কোনো সময় টাকা উত্তোলন করা যায়। চলতি বছরের জুলাই মাসে মোট চাহিদা আমানতের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে আগস্ট শেষে চাহিদা আমানতের পরিমাণ কমে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়।

ব্যাংকাররা বলছেন, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের কথা ভেবে মানুষ এখন ব্যাংকে টাকা না রেখে হাতে নগদ অর্থ রাখতে চাইছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ পর্যন্ত বেঁধে দেওয়ায় ব্যাংকগুলোও বেশি সুদের হারে আমানত রাখতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

সংকট মোকাবিলায় নগদ অর্থ সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া বাড়িয়েছে। এদিকে ডলার সংকটে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার বিক্রির কারণে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন তারা।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ