ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তা চায় বাজুস

প্রকাশনার সময়: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:১০

১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আনুমানিক ২০ জনকে হত্যা ও হামলা করে অনেককেই পঙ্গু, অর্ধ পঙ্গু করা হয়েছে বলে জানিয়ে জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তা চেয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বাজুস কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

বাজুস জানায়, কিছু কিছু মাল উদ্ধার করা হয়েছে। যা খুবই কম। তবে এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা উল্লেখযোগ্য। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। তবে এখন আগের থেকে অনেক পরিস্থিতি উন্নত।

সংগঠনটি জানায়, আর্থিক লুটের সঠিক তথ্য নেই। যাদের উপর হামলা হয়েছে তাদের ৯৯ শতাংশ মালামাল হারিয়েছে। আর বাকি এক শতাংশ মালামাল রক্ষা করার চেষ্টা করেছে। সেখানে অনেকেই মালামাল রক্ষা করতে গিয়ে জীবন হাটিয়েছে, আবার অনেকে সফল হয়েছে। তবে বাজুুস তাদেরকে বলে দিয়েছে, জীবন আগে পরে মালামাল।

বাজুস আরো জানায়, ইতোমধ্যে বাজুসের ৪০ হাজার কাছাকাছি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। অবশ্যই তাদের সবাইকে বিমার আওতায় আনা হবে। তবে অনেকেই এখন বীমার আওতায় আছেন, তবে এ সংখ্যা অনেক কম। স্বর্ণ বহন সহজ ও বিক্রয় করাও সহজ বলে ছিনতাই বেশি হচ্ছে।

সারাদেশে জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তার দাবিতে বাজুস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাসুজ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্নাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জুয়েলারি দোকানে চুরি ও প্রকাশ্যে ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১ আগস্ট গভীর রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া বাজারের মন্দির মার্কেটের কারুন জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণের ও দুই কেজি রূপার গহনা চুরি করে নিয়ে যায়। গত ২৯ জুলাই ২০২২ রাজধানী ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে রজনিগন্ধা মার্কেটে দিন দুপুরে নিউ বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ ও ৫০ ভরি রূপা চুরি করে নিয়ে যায়।

এছাড়া গত ২০ জুলাই, ২০২২ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলাধীন প্রদীপ জুয়েলার্সে প্রকাশ্যে ককটেল ফাটিয়ে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংগঠিত হয়। ডাকাতদল দোকান থেকে প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এসময় ডাকাতের গুলিতে দোকান মালিক অধীর কর্মকার গুরুতর আহত হন। এ ব্যাপারে ২১ জুলাই ভালুকা মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গত ৬ জুন ২০২২ ময়মনসিংহের ট্রাংক পট্টিতে বর্ষা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ২৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০ টা থেকে পরদিন সকাল ৯টার মধ্যে রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ কালী মন্দীর মার্কেটে মা গোল্ড হাউজে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারের রাঙ্গাপরি জুয়েলারি দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ নারায়ণগঞ্জের কালীবাজারে কার্ত্তিক জুয়েলাসে দুর্ধর্ষ চুরি সংগঠিত হয়। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ রাত আনুমানিক ৯ টা থেকে ১৮ ডিসেম্বর সকাল ৮ টার মধ্যে যে কোন সময় রাজধানীর রমনা মডেল থানাধীন কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি শপিং কমপ্লেক্স এর মোহনা জুয়েলার্স ও বেস্ট এন্ড বেস্ট গোল্ড ক্রিয়েশন জুয়েল এভিনিউ প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে রমনা মডেল মামলা দায়ের করা হয়।

সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বাজুস সদস্য ধীমান ধরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোক প্রকাশ করছি।

এসব মালামাল উদ্ধার ও বিচারের দাবি জানিয়ে এনামুল হক খান দোলন বলেন, আমরা ঘটনাগুলো দ্রুততার সাথে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা এবং চুরিকৃত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সাথে সারা দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যবসায়ী বলেন, বাজুস মনে করে- সারাদেশে শান্তি, শৃঙ্খলা রক্ষা ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গৌরবোজ্জল ভূমিকা রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ও ব্যবসায়ীক সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে গণমাধ্যম বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন মনিটরিং ডিস্ট্রিক অরগানাইজেশন ডাঃ দিলীপ কুমার রায়, সহ-সভাপতি, বাজুস ও চেয়ারম্যান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ব্যাকিং এন্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস গুলজার আহমেদ, বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ রিপনুল হাসান, জয়দেব সাহা, ইকবাল উদ্দিন, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের সদস্য, বিপুল ঘোষ শংকর, স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ ও বাবুল রহমান প্রমুখ।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ