ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সাইয়্যেদানা কমিউনিটি সেন্টারে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে ভোট গ্রহণ। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এই নির্বাচনের মাধ্যমে ২০২২-২৪ মেয়াদে দুই বছরের জন্য কার্যনির্বাহী পরিষদের ৯ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এই ৯টি পদের বিপরীতে অগ্রগামী, দ্য চেঞ্জ মেকারস ও ঐক্য নামে তিনটি প্যানেল থেকে ২৭ জনসহ মোট ৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ই-ক্যাবের প্রায় ১ হাজার ৭০০ সদস্যের মধ্যে ভোটার হয়েছেন ৭৯৫ জন। ই-কমার্স খাতে আস্থা ফেরানোসহ সংগঠনের স্থায়ী কার্যালয় স্থাপন, সদস্যদের ঋণের ব্যবস্থা করাসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রার্থীরা।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনে এর আগেও তিনবার নির্বাচন হয়েছে। সেগুলোর প্রতিটিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সবাই। সে হিসেবে এবারই প্রথম ভোটাভুটির মাধ্যমে কমিটির সদস্যরা নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচনে অগ্রগামী প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ধানসিঁড়ি ডিজিটাল লিমিটেডের শমী কায়সার। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন কমপিউটার জগতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবদুল ওয়াহেদ, ডায়াবেটিস স্টোরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ সাহাব উদ্দিন, রিভারির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিমা আক্তার, ব্রেকবাইটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহনাফ, ডিজিটাল হাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ সাইদুর রহমান, ফোকাস ফ্রেমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস, পেপার ফ্লাইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার হাসান এবং ফুডপান্ডা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহপ্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা আম্বারীন রেজা।
অগ্রগামীর ইশতেহারে ১০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি, ই-ক্যাবের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি তৈরির জন্য সরকারকে সহযোগিতা, নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, নতুন উদ্যোগ বা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে বিনিয়োগ ও পরামর্শসেবাসহ সাতটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
এই প্যানেলের প্রার্থী এবং উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের (উই) প্রতিষ্ঠাতা নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ভালো একটি নির্বাচন হবে। সবাই মিলে কাজ করব এটাই প্রত্যাশা।’
এবার নির্বাচনে আলোড়ন তোলা প্যানেলটি হলো দ্য চেঞ্জ মেকার্স। প্যানেলের নেতা বাংলামেডস ফার্মেসি লিমিটেডের ওয়াসিম আলিম। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন—সিপ্রোকো কম্পিউটারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাফকাত হায়দার, ক্লিনফোর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তাসদীখ হাবীব, আরটিএস এন্টারপ্রাইজের সহপ্রতিষ্ঠাতা জিসান কিংশুক হক, কিনলের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, নিজল ক্রিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান, ই-কুরিয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিপ্লব ঘোষ, সেবা ডট এক্সওয়াইজেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা ইলমুল হক এবং হুর নুসরাতের স্বত্বাধিকারী নুসরাত আক্তার। তাদের ইশতেহারে সংগঠনের নিজস্ব অফিস করা, সচিবালয়কে শক্তিশালী করতে ২০২৩ সালের মধ্যে একজন নির্বাহী পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের আরেকটি প্যানেল হলো ঐক্য। এই প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন যাচাই ডটকম লিমিটেডের আবদুল আজিজ। অন্য সদস্যরা হলেন—মেনসেন মিডিয়ার তৌহিদা হায়দার, স্কুপ ইনফোটেক লিমিটেডের আরিফ মোহাম্মদ আবদুস শাকুর চৌধুরী, পরান বাজারের মো. আরিফুল ইসলাম, এসএম ইন্টারন্যাশনালের মো. ছোফায়েত মাহমুদ, ক্রাফটস ম্যান সল্যুশনের মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম, র্যাপিডো ডেলিভারিসের সামদানী তাব্রীজ, আই এক্সপ্রেস লিমিটেডের মো. তাজুল ইসলাম এবং নুরতাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের মো. সেলিম শেখ।
নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমিন হেলালী। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন—মো. আবদুর রাজ্জাক, এ এইচ এম বজলুর রহমান ও আবদুল আজিজ।
ই-ক্যাব নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আমিন হেলালী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট ৩৫০ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ভোট গ্রহণ চলবে। তবে সময় শেষ হলেও লাইনে দাঁড়ানো সব ভোটারকে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। আশা করি, রাত আটটার মধ্যে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হবে।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ