সিলেট-সুনামগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলোতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ আদায় ৬ মাস স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত নতুন ঋণ দিতেও বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (৬ জুন) সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক সার্কুলারে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এই সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় শস্য বা ফসল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঙ্গে জড়িত এতদ্বঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এমতাবস্থায়, বন্যা কবলিত অঞ্চলের কৃষকদের ক্ষতি মোকাবিলাসহ তাদেরকে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত রাখার লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশনায়। বলা হয়েছে, পাশাপাশি শস্য-ফসল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে দ্রুত নতুন ঋণ বিতরণ করতে হবে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য গঠিত তিন হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ব্যাংকের অব্যবহৃত স্থিতির ন্যূনতম ২০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই ছয় জেলায় বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ডাউন পেমেন্টের শর্ত শিথিল করে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ সুবিধা দেওয়া যাবে। তবে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় বিনা ডাউন পেমেন্টেও ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। একইসঙ্গে কৃষক ও গ্রাহক পর্য়ায়ে নতুন ঋণ সুবিধা দেওয়া।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, নতুন করে কোনো সার্টিফিকেট মামলা না করে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে অনাদায়ী ঋণগুলো তামাদি হওয়া প্রতিবিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং দায়ের করা সার্টিফিকেট মামলাগুলোর তাগাদা আপাতত বন্ধ রেখে সোলেনামার মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বসতবাড়ির আঙিনায় হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু পালন, গো-খাদ্য উৎপাদন ও কেনা এবং অন্যান্য আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যেন প্রকৃত চাহিদা অনুযায়ী যথাসময়ে নতুন ঋণ নিতে পারেন এবং ঋণ পেতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টি তদারকির তাগিদও দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলার লিড ব্যাংকের মাধ্যমে জেলা কৃষি ঋণ কমিটির সভার মাধ্যমে ঋণ বিতরণ পরিস্থিতি তদারকি করতে বলে এ নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে গৃহীত কার্যক্রমের অগ্রগতি সংযোজিত ছকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বেরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি বিভাগকে জানানোর নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ