ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

'সফলতার কোন শর্টকাট রাস্তা নেই'

প্রকাশনার সময়: ০৪ জুন ২০২২, ০০:২৩

যেকোন কাজে সফল হতে চাইলে যথেষ্ট সময়, মেধা ও পরিশ্রম বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বিক্ষিপ্তভাবে আজকে এই কাজ, কালকে ঐ কাজ করলে কোনো কাজই ঠিক সময় মত শেষ হয় না। আপনি যেই কাজে সফল হতে চাইবেন সেই কাজটির মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে হবে এবং একাগ্রচিত্তে ঐ কাজের পিছনে লেগে থাকতে হবে। আপনি চাইলেই হুট করে আজকে থেকে নতুন একটি কাজের মধ্যে নিজের শতভাগ দিতে পারবেন না। যেই কাজটি করছেন সে কাজটিকে ভালবাসাতে হবে এবং সব থেকে বড় বিষয় ঐ কাজটার সাথে নিজেকে অভ্যস্ত করাতে হবে। কথাগুলো বলছিলেন জীবন যুদ্ধে দমে না যাওয়া এক যোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করতে করতে আজ পেয়েছে সফলতার দেখা। তিনি যশোদা জীবন দেবনাথ। যিনি মাত্র তিন মাস বয়স থেকেই দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ শুরু করেন। সময়ের সাথে সাথে দোকানের কর্মচারী, মেরামত কাজের সহযোগী ও টিউশনি করে কেটেছে শৈশবের পুরোটা সময়। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। বর্তমানে তিনি বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক।

তার চেয়েও বেশি পরিচিত টেকনোমিডিয়া লিমিটেড ও প্রোটেকশন ওয়ান প্রাইভেট লিমিটেডের কারণে। দেশের এটিএম মেশিনের সিংহভাগই সরবরাহ করছে তার প্রতিষ্ঠান।

সম্প্রতি তিনি তার সফলতা-ব্যর্থতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয় নিয়ে তার সাথে কথা হয়েছে। সে বিষয় গুলো নয়া শতাব্দীর পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।

নয়া শতাব্দী: কেমন আছেন, দিনকাল কেমন চলছে?

যশোদা জীবন দেবনাথ : খুব ভাল আছি। সবকিছু মিলে ভালোই চলছে।

নয়া শতাব্দী : ব্যক্তিগত জীবনে কোন বিশেষ ঘটনা আপনাকে প্রভাবিত করেছিল যার জন্য আজ এত দূর আসতে পেরেছেন?

যশোদা জীবন দেবনাথ : আমার ছোটবেলার ইতিহাসটা বেশ সুখকর ছিলোনা। আমাদের ছোট এক পরিবারে বাবা কৃষি কাজ করতেন। অনেক সংগ্রাম, যুদ্ধ করেই পার করেছি প্রতিটি দিন। এ যুদ্ধ দারিদ্রতার সাথে, খাবারের সাথে, নিজের অস্তিত্বের সাথে। এভাবেই আমার বেড়ে ওঠা। ১৯৭১ সালে আমার বয়স তখন মাত্র তিন মাস। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়। আমার বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ওই সময়ে আমরা অনেক কষ্টে ৬ দিন হেটে ফরিপুর থেকে রানা ঘাটে চলে যাই। আমরা শরণার্থী শিবিরে দীর্ঘ নয় মাস কাটানোর পর বাংলাদেশে এসে দেখি আমাদের বাড়ি ঘরের কিছুই অবশিষ্ট নেই। এর আগেই আমাদের গ্রামে সাতজনকে একযোগে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। ওই সাতজন নিহতের মাঝেই আমার পিতামহও একজন। এসবকিছুই বাবা মায়ের স্মতিচারন। আমার স্কুল জীবন অবধি দারিদ্রতার চরম সীমানাকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। দেখেছি জীবনের সাথে ঝলসে যাওয়া এক ভিন্ন জীবনকে। আমার এসএসসি পরিক্ষার আগ মুহূর্তে মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। টানা তিনদিনের এই বৃষ্টি। এ সংকটময় সময়ে প্রথম দিনে আমাদের বাড়িতে খাবারের মত কিছুই ছিলোনা। মা কিছু গম ঢেঁকি ছাটা করে আনলেন। সেই গম দিয়ে খাবার বানালেন। এভাবেই সংকট আর সংশয়ে কেটেছে প্রতিটি মুহূর্ত। দ্বিতীয় দিনেও খাবারের মত কিছুই নেই। একদম কিছুই না। তৃতীয় দিনে অবস্থা আরো খারাপ। বাবা মায়ের অসহায় চাহনি আর কিছুই করতে না পারার দায় আমাকেও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল।

বাড়ির পাশের নারকেল গাছ থেকে কয়েকটা নারকেল পেরেছিলাম আমি। দ্বিতীয় গাছে উঠতে গিয়ে আমার পায়ের দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় অনেক উপর থেকেই নেমে আসতে হয়। একদিকে বুকে ক্ষত থেকে রক্ত আরেকদিকে মাথায় নারকেল নিয়ে গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার দূরে কানাইপুর হাটে গেলাম। নারকেল বিক্রি করা টাকা দিয়ে দুই কেজি চাউল ও একটি ছোট ইলিশ মাছ কিনে এনেছিলাম। মা সেগুলো রান্না করে আমাদের দিলেন। আমার জীবনের সবচেয়ে সুস্বাদু সেই খাবার। সেই থেকেই এখনো আমার বৃষ্টি হলেই মন খারাপ হয়। অতীতের সেই স্মৃতি হানা দেয় বন্ধ দরজায়। মনে হয় দারিদ্রতার সেই ছায়া আমাকে আবারো ভর করেছে।

এভাবেই সময়ের চাকার সাথে আমার বেড়ে ওঠা। ভাঙ্গা গড়ার এক অবিরাম-অবিরত যুদ্ধে। গ্রামের পাশে জনতা স্টোরে আড্ডা দিতাম। সেখানে বন্ধুদের অনেক বলেছি আমাকে একটি চাকরি জোগাড় করে দিতে। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। মানুষের অর্থবিত্ত না থাকলে শুভাকাঙ্ক্ষীরাও পাশে থাকেনা।

অনেক পরিচিত মুখ মুহূর্তেই অপরিচিত হয়ে ওঠে। তবে জনতা স্টোরে স্বপন নাম করে আমার এক বন্ধু ছিলো। সে কর্মচারীর কাজ করতো। তার সহযোগিতায় আমি সেই দোকানে কাজ করার সুযোগ পাই। দোকান মালিকের বাড়িতে সকলের খাওয়া শেষ হলে টেবিল পরিস্কার করে সেখানেই আমি ঘুমাতাম। সকালেই আবার দোকান খুলতাম। এভাবেই সময়ের সাথে আমিও বুঝতে শিখি জীবনকে। পরবর্তীতে ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে আমি ভর্তি হই। সেসময়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মোস্তফা কামাল আমার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন। তার বাসাতেই বাচ্চাদের পড়াতাম।

ভদ্রলোক আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। অর্থ আর মানসিকতার লড়াইয়ে পাশে থেকেছেন। অনন্তর অনুপ্রেরনা দিয়ে গেছেন। ঢাকায় এসে একটি কম্পিউটার ফার্মে যুক্ত হতেও তিনি সহযোগিতা করেছিলেন। কম্পিউটার সার্ভিসেস নামের সেই প্রতিষ্ঠানে শেখার সুযোগ ও কিছু টাকাও পেলাম। জগতে কিছু মানুষ থাকে যারা অপরের প্রয়োজনে নিজের সর্বস্ব দিতে পিছুপা হন না। তিনি সেই বিরল মানুষদের একজন।

নয়া শতাব্দী : সংশয় আর সংগ্রামের এতটা পথ পাড়ি দিলেন, কে পর্দার আড়াল থেকেও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে? জীবনের এই মুহূর্তে এসেও কাকে বেশি মনে পড়ছে?

যশোদা জীবন দেবনাথ: অনুপ্রেরণা বলতে আমার সেই শৈশবের ছায়া মোস্তফা কামালকেই বুঝি। এছাড়াও কিছু বন্ধুরা পাশে থেকেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। জীবনের এই পর্যায়ে এসে ঈশ্বর আমায় অনেক দিয়েছেন। কিন্তু মোস্তফা কামালের সেই ঋণ আজও পরিশোধ করতে পারিনি। কিছু ঋণ পরিশোধ করাও যায়না। থাকুক না এমন কিছু অস্তিত্বের ঋণ! পাশাপাশি আমার বাবা মায়ের আশীর্বাদ সেই গ্রামের ছোট যশোদা জীবন থেকে সিআইপি যশোদা জীবন দেবনাথে পরিনত করেছে। বাবার মাত্র ১৫০০ টাকা আয়ের অর্ধেকই আমাকে দিয়ে দিতেন। যমুনা সেতু বানানোর সময়তেও আমি সেখানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছি। জীবনে অনেক সীমাবদ্ধতাকে কাছে থেকে দেখেছি। মানতে ও মানিয়ে নিতে শিখেছি।

নয়া শতাব্দী : কিভাবে সফলতার যাত্রা শুরু হয়েছিল?

যশোদা জীবন দেবনাথ: ২০০৭ সালে আইটি ফার্ম করে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ে কম্পিউটার সরবরাহ করি। জুলাইতে গিয়ে বিল সাবমিট করলাম। কিন্তু দেখতে পেলাম ফান্ডে কোন টাকা নেই। বিল পেতে আমাকে আরো একটি বছর অপেক্ষা করতে হবে। একদিকে সকলের থেকে ধার-দেনা করে টাকা নিয়ে কম্পিউটার সরবরাহ করায় তাদের বকেয়া দেবার চাপ অপরদিকে মানসিক বিষণ্ণতা আমার চলার পথকে স্থবির করে দিয়েছিলো। ওই মুহূর্তে আমার বাসায় রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও পর্যাপ্ত অর্থ ছিলো না। হাতের একটি ব্রেসলেট বিক্রি করে কিছুদিন চলতে থাকলাম। এমন একটি মুহূর্তে ঘুমাতেও পারছিলাম না। এরপর আমার জীবনে কিছু ঘটনা ঘটেছিল- যা কাকতালীয় মনে হতেই পারে। একরাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে একটি মন্দিরে আমি বসে ছিলাম। একা এবং নিশ্চুপ বিষণ্ণ অন্ধকার। খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে জীবনে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসেব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করতেছিলাম। আমি জানতাম না ঈশ্বরকে কিভাবে ডাকতে হয়। কিন্তু আমার অবচেতন মনের সেই আর্তনাদ ঈশ্বরের দুয়ার অবধি গিয়েছিল। আমি সেই গভীর রাতে আমাকে সাহায্য করার জন্য জাগতিক সব মায়াকে বিভ্রম ভেবেই ঈশ্বরের কাছেই বারবার চাইতেছিলাম। আমি অনবরত কেঁদে চলছিলাম তখন। আমার বোবা চিৎকার আর অন্তরের সেই আরাধোনা হালকা করে তুলেছিল। এতটা সংগ্রামেও ঈশ্বরের প্রতি আক্ষেপ হয়নি কখনো। হঠাৎ এক পাগল আসলেন আমার দিকে। আমি শিহরিত হলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যা আছে আমাকে দিয়ে দাও। আমার পকেটে থাকা শেষ দুইটি ৫০০ টাকার নোট তাকে দিয়ে দিলাম। তখন আমার পরেরদিন সকালে কিভাবে চলবে তাও জানা ছিলো না। মুহূর্তেই তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। এসবকিছুই আমার কাছে স্বপ্ন মনে হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসবই ঘটেছিল আমার সাথে। এরপর ভীত সন্তন্ত্র হয়ে আমি বাসায় ফিরিতে লাগলাম। ফেরার পথে পিছন থেকে আমার নাম ধরে ডেকে অন্য এক ভদ্রলোক আসলেন। আমাকে কিছু টাকাও দিলেন। টাকা গ্রহণের পর আমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই তিনিও বিমূর্ত হয়ে গেলেন। পরেরদিন সকালে বাসায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে একটি মেইল পেলাম। আমি সরাসরি যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে কাজ করার সুযোগ দিলেন। এসবই কাকতালীয় মনে হয়েছিল। যেহেতু আমার সাথে আগের রাতে অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছিল সেহেতু এগুলো আস্তে আস্তে স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। তারা আমাকে অগ্রিম টাকাও দিলেন কাজ শুরু করতে। সেই থেকেই আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

নয়া শতাব্দী : সামনের পরিকল্পনা জানতে চাই?

যশোদা জীবন দেবনাথ: আমি বর্তমানে অনেকগুলো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। যেগুলোতে আমাকে আইসিটি মিনিস্ট্রি সাহায্য করছে। বাংলাদেশে এখন প্রায় ১৪০০০ এটিএম মেশিন আমার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে এখনো এই সুবিধাগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ডিজিটাল প্রেমেন্ট সিস্টেমটা আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। একটা শহরের মানুষ যদি ২৪ ঘন্টা ব্যাংকিং সুবিধা পেতে পারে তাহলে একটি গ্রামের মানুষও সেটা পাবে। আমি গ্রামের মানুষের সাথে কানেক্তিভিটি তৈরি করার জন্য এটিএমকে ইউনিয়ন পর্যায়ে নিতে পরিকল্পনা করে রেখেছি, এমনকি কাজও শুরু করেছি। এ সুবিধা চালু হলে গ্রামের মানুষের ঘরের ভেতর টাকা রাখার প্রবণতা কমে যাবে। উন্নত হবে জীবন যাত্রার মান। বাড়বে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।

নয়া শতাব্দী : আমরা জেনেছি একাধিকবার পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই মানসিকতা কিভাবে আসলো?

যশোদা জীবন দেবনাথ: আগেই বলেছি আমার ক্যারিয়ারের প্রথম ব্যক্তি একজন পুলিশ অফিসার। তিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন। একদিন বৃষ্টিতে দুইজন পুলিশ সদস্য আমার বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এবং তারা আমাদের বাড়িতে অবস্থা নেন। তারা আমার মাকে বললেন আপনার ছেলে তো অবস্থা সম্পূর্ণ। তাকে বলে আমাদের একটা গাড়ির ব্যাবস্থা করে দেন। তখন মা আমাকে বললো তিনি পুলিশকে কথা দিয়েছেন একটা গাড়ি দেওয়ার জন্য। আমি মায়ের কথা রক্ষা করার জন্য তাদের গাড়ি দিলাম। তার পর মা বললো এখানে একটা পুলিশ ফাঁড়ি করে দেও। তখন আমি সেখানে ও জমি দান করে দিলাম। এভাবেই আসলে হেল্প করা।

নয়া শতাব্দী : আমরা জেনেছি আপনি অনেকগুলো বইও লিখেছেন। প্রথম বই প্রকাশের স্মৃতি জানতে চাই?

যশোদা জীবন দেবনাথ: ২০১৯ সালের শেষের দিকেই করোনার আতঙ্ক শুরু হয়। গতিশীল জীবন থেকে ঘরবন্দি এক অবস্থায় স্থবির হয়ে পড়ে জীবন। সে সময়ে আমার মানসিকতাকে পরিবর্তন করতে লেখালেখি শুরু করি। আমি প্রথমে আমার নিজের সম্পর্কে লেখা শুরু করলাম। প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখতাম। তবে লেখাটা আমার ছেলেবেলার ঘটনা দিয়েই শুরু করি। নিজের জীবন যুদ্ধের কথা পান্ডুলিপি আকারে এজন্যই লিখতাম যাতে আমার পরবর্তী প্রজন্ম জানতে পারে আমি কতটা সংগ্রাম করে এই অবস্থানে এসেছি। শুরুর দিকে আমি একটা করে পর্ব লিখতাম। এভাবে প্রায় ৪৩ দিন যাবত আমার নিজের সম্পর্কে লিখেছি। পাশাপাশি নিয়মিত ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেছি। বন্ধুরাও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে লিখতে। অনেকেই অপেক্ষায় থেকেছে পরবর্তী অংশে কি আসবে এই নিয়ে। ইন্ডিয়ার অনেক বন্ধুরাও আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রেরণা দিতো। একদিন ইন্ডিয়ার এক বন্ধু আমার লেখা পান্ডুলিপিটি বই আকারে ছাপানোর আগ্রহ প্রকাশ করলেন। তখন আমি অনুমতি দিলে ভারতেই আমার বইয়ের প্রথম প্রিন্ট হয়। বইটি প্রকাশের পর তিনি আমকে পিডিএফ প্রেরণ করলে আমি পুনরায় বাংলাদেশে প্রিন্ট করি। এইটা আমার দ্বিতীয় প্রিন্ট। তার পর একটার পর একটা শুরু করলাম। এবং আমি প্রতিদিন ফেসবুকে কিছু না কিছু লিখতে শুরু করি। যখন অবসর থাকি তখন এই ছোট-ছোট কিছু অনুভূতি আর জীবন দর্শন ফেসবুকে লিখতে থাকি। এর মাঝে একটা ছেলে এসে বললো- আপনি এ পর্যন্ত ফেসবুকে যা যা লিখছেন আমি সেগুলো দিয়ে একটি বই বানাতে চাই। আপনি একটি নাম ঠিক করে দেন। আমি বললাম বইটির নাম দিতে পারো- জীবন থেকে নেওয়া। এভাবেই শুরু হয় লেখালেখি।

নয়া শতাব্দী : আপনার চরিত্রের শক্তিশালী দিক কোনটি বলে মনে করেন?

যশোদা জীবন দেবনাথ: এক কথায় বলতে গেলে আত্মশক্তি। আমি সকালে কাজে বের হই, কিন্তু সন্ধ্যা অবধি কাজ করার পড়েও মনে হয় আমি এখনি কাজে আসছি। ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত হলে কেউ আপনাকে থামাতে পারবে না। ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত হলে তাকে আটকে রাখা অসম্ভব।

নয়া শতাব্দী : তরুণদের জন্য কি পরামর্শ?

যশোদা জীবন দেবনাথ: চাকরি একটা বদ নেশা। কারো যদি সৎ ইচ্ছা থাকে তাহলে সে চাকরির পেছনে ঝুঁকবে না। ব্যবসা করবে অথবা ফ্রিল্যান্সিং। অনেক কাজ করার সুবিধা আছে। একটা চাকরি করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বেতন পায়। অপরদিকে ফ্রিল্যান্সিং করে ১ লক্ষ টাকার উপরে আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে কিন্তু নিজের স্বাধীনতাও রয়েছে। সুতরাং আমি সবসময় তরুনদের চাকরির পেছনে দৌঁড়াতে নিষেধ করি।

নয়া শতাব্দী : আমাদের সময় দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

যশোদা জীবন দেবনাথ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

নয়া শতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ