ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিকানা, লেনদেন অপরাধ নয়

প্রকাশনার সময়: ২৭ জুলাই ২০২১, ১৭:৫২

ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিকানা, সংরক্ষণ বা লেনদেন অপরাধ নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডিকে পাঠানো এক চিঠিতে এ মতামত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ।

দৈনিক প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের সহকারী পরিচালক শফিউল আজম ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ব্যাংকের অবস্থান জানান সিআইডিকে।

সেখানে তিনি লেখেন, 'ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিকানা, সংরক্ষণ বা লেনদেন স্বীকৃত না হলেও এটিকে অপরাধ বলার সুযোগ নেই মর্মে প্রতীয়মান হয়।'

ওই চিঠিতে বলা হয়, "বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংক বিগত ২৪/১২/২০১৭ ইং তারিখে বাংলাদেশ ভাংকের ওয়েবসাইটে কৃত্রিম মুদ্রায় (যেমনঃ বিট কয়েন) লেনদেন হতে বিরত থাকার বিষয়ে সতর্কীকরণ বিজ্ঞান্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি সমসাময়িক কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এখনও প্রচার করা হচ্ছে। বস্তুত, এরূপ ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের মাধ্যমে আর্থিক এবং আইনগত ঝুঁকি রয়েছে বিধায় বাংলাদেশ ব্যাংক জনস্বার্থে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, 'নামবিহীন বা ছদ্মনামে প্রতিসঙ্গীর সঙ্গে অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের দ্বারা মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।'"

চিঠিতে আরও বলা হয়, ক্রিপ্টোকারেন্সি এর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কোন নীতিমালা প্রণয়ন করেনি।

"বিদ্যমান ব্যবস্থাদি পর্যালোচনায় ক্রিপ্টোকারেন্সি এর মালিকানা, সংরক্ষণ বা লেনদেন স্বীকৃত না হলেও এটিকে অপরাধ বলার সুযোগ নেই মর্মে প্রতীয়মান হয়। তবে এসব ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের ফলাফল হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৪৭; সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর আওতায় অপরাধ সংঘটিত হতে পারে, যা বাংলাদেশ পুলিশ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অধিকতর অনুসন্ধান করে দেখতে পারে।"

একই চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমান বিশ্বে ভার্চ্যুয়াল মুদ্রার বাজার দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রচলনের প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্বের কোনো আইনগত কর্তৃপক্ষ এই মুদ্রাকে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু বর্তমানে কয়েকটি দেশের (যেমন: জাপান, সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) কেন্দ্রীয় ব্যাংক/মুদ্রা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনকে বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো এ ধরনের প্রাইভেট কারেন্সিতে লেনদেন বা সংরক্ষণের অনুমোদন দেয়নি।

প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, "এর মধ্যেই ক্রিপ্টোকারেন্সিকে একেবারে নাকচ করে না দেওয়ার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে সংস্থাগুলোর মধ্যে। যেমন, সরকারের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি ডিভিশন। ২০২০ সালের মার্চে এ বিভাগ ন্যাশনাল ব্লকচেইন স্ট্র্যাটেজি করে। ওই কৌশলপত্রে তারা বলেছে, ব্লকচেইন স্টার্টআপে ২০১৩ সাল থেকে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে। এই বিনিয়োগ ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। বাংলাদেশি সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিগুলোর জন্য এটা একটা সুযোগ। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকায় বাংলাদেশের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি এ আকর্ষণীয় সুযোগের বাইরে থেকে যাচ্ছে।"

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ