ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনিয়োগ বাড়াতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে চিঠি

প্রকাশনার সময়: ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৩:৪৫

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে বিশেষ তহবিল গঠনসহ নতুন বিনিয়োগের তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি কমিশনের পক্ষ থেকে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের কাছে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ অনুসারে, এককভাবে একটি ব্যাংক তার ইকুইটির ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বর্তমানে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার নিচে রয়েছে। ফলে বিদ্যমান আইনি সীমার মধ্যেই এ ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে আরো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এজন্য তাদের কাছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ-সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত এই চার ব্যাংক এখনো বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেনি। ফলে প্রচলিত সুযোগের পাশাপাশি বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক তারল্য সংকটের সময় তাই এই ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি।

জানতে চাইলে বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নয়া শতাব্দীকে বলেন, নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু তারা সেটা করছে না। তাই এসব ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানো এবং বিশেষ তহবিল গঠনে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়টিই জানতে চাওয়া হয়েছে।

এর আগে তালিকাভুক্ত লিজিং, ফাইন্যান্স ও বীমার শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তথ্য জানতে চায় বিএসইসি। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রতি মাসের শুরুতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ডিএসই ও সিএসই প্রতি মাসের শুরুতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কমিশনে জমা দিবে।

এ বিষয়ে বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১১(২) এর অধীনে, দুইটি এক্সচেঞ্জের যে কোনো একটিতে তালিকাভুক্ত সকল লিজিং, ফাইন্যান্স এবং বীমা কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তথ্য জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই এক্সচেঞ্জ ডিএসই ও সিএসইকে এই চিঠি দেয়ার পর প্রতি মাসের শুরুতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কমিশনে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সাপোর্ট দেয়ার জন্য ৬১টি ব্যাংককে বিদ্যমান সক্ষমতার মধ্য থেকে বিনিয়োগ করার জন্য চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। যে ব্যাংকগুলোর ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৪২টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক ও ৯টি বিদেশি ব্যাংকসহ বাংলাদেশে মোট তালিকাভুক্ত ৬১ ব্যাংককে উল্লিখিত নির্দেশনা জানানো হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এই চিঠি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। দুই ফরমেটে ৬১টি ব্যাংককে এই চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিএসইসির ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। যা বিনিয়োগ সীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না। এছাড়া ব্যাংকিং কোম্পানিজ আইনে প্রতিটি ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এই মূলধনের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, স্ট্যাচুরি রিজার্ভ ও রিটেইন আর্নিংস অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু অনেক ব্যাংক বিনিয়োগ সীমা ও ২০০ কোটির বিশেষ তহবিলের থেকে অনেক কম বিনিয়োগ করেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ২০০ কোটির বিশেষ তহবিল গঠনই করেনি। এই পরিস্থিতিতে ৩৩ ব্যাংককে বিনিয়োগ সীমা অনুযায়ী, ও বিশেষ তহবিল থেকে বিনিয়োগের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশেষ তহবিল গঠন না করা ২৮ ব্যাংককে গঠন করে বিনিয়োগের জন্য বলা হয়েছে। বিএসইসির চিঠি অনুযায়ী, ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে পুঁজিবাজারে মাত্র ৩৩টি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। এখনো ২৮টি ব্যাংক এই তহবিল গঠন করেনি। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংক বিনিয়োগ সীমার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করেনি।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ