দেশে গত এক বছরে অর্থ পাচার বিষয়ক বা সন্দেহজনক লেনদেন ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে পাঁচ হাজার ২৮০টি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৬৭৫টি। তবে শুধু দুর্নীতি বাড়ার কারণে এমন লেনদেন বেড়েছে, তা নয়। সন্দেহজনক লেনদেন মনিটরিং জোরদার করা এবং এ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা আরো বেশি সচেতন হওয়ায় এমন লেনদেনের চিত্র বেশি সামনে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার ‘বিএফআইইউ-এর বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২০-২০২১ এবং বিএফআইইউ-এর কার্যক্রম অবহিতকরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব জানানো হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ সভার আয়োজন করে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অবৈধভাবে যেসব অর্থ লেনদেন হয়েছে, তার বেশিরভাগই ব্যাংকিং মাধ্যমে। অন্যান্য মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের পরিমাণ খুবই কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট পাঁচ হাজার ২৮০টি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে, যা তার আগের অর্থবছরে (২০১৯-২০২০) ছিল তিন হাজার ৬৭৫টি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিএফআইইউ-এর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এ বি এম জহুরুল হুদা, পাবলিকেশন ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার জি এম আবুল কালাম আজাদ, বিএফআইইউ-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কামাল হোসাইন, জয়েন্ট ডিরেক্টর ইকরামুল হাসান প্রমুখ।
বিএফআইইউ-এর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, এ বছর আমরা বিএফআইইউ-এর ২০ বছরপূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের মানিলন্ডারিং ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তথ্যপ্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা এবং ঝুঁকির ধরণ পাল্টেছে। আমরাও বিভিন্নভাবে সমৃদ্ধ হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা যেসব সন্দেহজনক লেনদেন চিহ্নিত করি, তার ২৬ দশমিক ১ শতাংশ তথ্য আসে গণমাধ্যম থেকে। গত ৭ মার্চ বিএফআইইউ-এর স্বতন্ত্র ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে পরিচয় গোপন করে যে কেউ অভিযোগ করতে পারবেন। সেটাকে গুরুত্ব সহকারে দেখবে গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ইদানিং ই-কমার্সের মাধ্যমে শতশত অবৈধ লেনদেন হচ্ছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কানাডার বেগমপাড়া, মালয়েশিয়া এবং পি কে হালদার নিয়ে আমরা কাজ করেছি। এ বিষয়ে যথাযথ সংস্থাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিএফআইইউ সরকারের একটি সংস্থা। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধে কাজ করে সংস্থাটি। সন্দেহজনক যে কোনো ধরনের লেনদেন, অর্থ পাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা এই সংস্থার প্রধান কাজ।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ