ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্বের পরিমাণ কমছে

প্রকাশনার সময়: ০৭ মার্চ ২০২২, ১০:৫৫

চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সতর্কতা বাড়িয়েছে ভারত। এখন পর্যন্ত ভ্রমণ ভিসায় দেশটিতে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নানা বিধিনিষেধের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াত কমে গেছে। এ কারণে ভ্রমণ খাত এখন স্থবির হয়ে আছে। ফলে এ পথে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে যাত্রী যাতায়াত কমেছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৩৩ জন। এ সময়ে ভ্রমণ খাতে সরকারের রাজস্ব কমেছে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা।

জানা গেছে, যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর হয়ে প্রতি বছর স্বাভাবিক সময়ে ভারতের সঙ্গে ২৩ থেকে ২৪ লাখ মেট্রিক টন পণ্যের আমদানি হয়ে থাকে। পাশাপাশি চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা এবং ভ্রমণ ভিসায় প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ যাত্রী ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াত করে থাকেন। বাণিজ্য খাত থেকে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পায় সরকার।

সেই সঙ্গে ভ্রমণ খাত থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি রাজস্ব আসে। কিন্তু চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সতর্কতা বাড়িয়েছে ভারত। এতে সংক্রমণ রোধে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ ভ্রমণ ভিসার নিষেধাজ্ঞা এবং ২৬ মার্চ স্থলপথে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ৪ মাস পর বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় ধীরে ধীরে বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভ্রমণ ভিসায় যাতায়াত বন্ধ রয়েছে।

ভারত ফেরত যাত্রী মীর জহিরুল ইসলাম জানান, দেশে চিকিৎসাসেবার ওপর ভরসা করা যায় না। অধিকাংশ চিকিৎসক রোগ ধরতে পারে না। ভুল চিকিৎসায় লাখ লাখ টাকা পানিতে যায়। দেশে চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নতি হলে করোনাকালীন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারতে যেতে হতো না।

দেশের টাকাও দেশেই থাকত। বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মনিটরিং অফিসার মেজবাউল হাসান বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারত ফেরত সন্দেহভাজনদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত দুই মাসে ১৪০ জনের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করার পর ৯ জন পজিটিভ হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভারতে অবস্থানকালেও করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন। আক্রান্তদের যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেড জোনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু বলেন, করোনা মহামারির আগে স্বাভাবিক সময়ে এ পথে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করত। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ থাকায় যাত্রী যাতায়াত কমেছে। গতকাল মাত্র দুই শতাধিক বাংলাদেশি ভারতে গেছেন এবং ভারত থেকে ৯৮ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন। ভারত থেকে ফিরতে ও ভারতে যাওয়ার সময় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর থেকে পরীক্ষা করা করোনা নেগেটিভ সনদ লাগছে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বাণিজ্য। তবে ভ্রমণে এখনো নিষেধাজ্ঞা থাকায় মারাত্মক হারে যাত্রী যাতায়াত কমেছে। বর্তমানে মেডিকেল, বিজনেস ও শিক্ষা ভিসায় সীমিত সংখ্যায় যাত্রী যাতায়াত করছে। ভ্রমণ ভিসায় যাতায়াত এখনো বন্ধ রয়েছে। বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত দুটোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭৪ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য। ২০২০-২১ সালে আমদানি হয়েছে ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৭২৭ মেট্রিক টন।

২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি বেড়েছে ৯৭ হাজার ৬৫৩ মেট্রিন টন। ২০২০ সালে ভারতে গেছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ১০৭ যাত্রী। ২০২১ সালে ভারতে গেছে মাত্র ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭৪ জন। ফলে এ পথে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে যাত্রী যাতায়াত কমেছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৩৩ জন।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ