শীত চলে আসলেও বাজারে এখনও কমেনি অধিকাংশ সবজির দাম। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। সেই সঙ্গে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়লো ১৫ টাকা। অন্যদিকে পাকা টমেটোর দাম কমে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে দাম কমেছে নতুন আলুর।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬৫-১৭০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০-১৬৫ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা।
বয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির। ব্যবসায়ীরা সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৭০-২৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫০-২৭০ টাকা।
মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে বয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় বয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণেই দাম বাড়ছে। আর বয়লার মুরগির দাম বাড়ার কারণে সোনালী মুরগির দামও বেড়েছে।
মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের মতো পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। তবে বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।
এদিকে, কয়েক মাস ধরে বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম কমে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। গত সপ্তাহে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো এখন ৪০-৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
পাকা টমেটোর এমন দাম কমার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী ময়নাল শেখ বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে নতুন টমেটো আসছে। দিন যত যাচ্ছে পাকা টমেটোর সরবরাহ বাড়ছে। এ কারণেই দাম কমে গেছে। আমাদের ধারণা কয়েকদিনের মধ্যেই পাকা টমেটোর কেজি ৩০ টাকার নিচে চলে আসবে।
পাকা টমেটোর পাশাপাশি বাজারে নতুন আসা আলুর দামও কমেছে। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া নতুন আলু এখন ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। পুরাতন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন শিমের কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। আর বাজারে নতুন আসা লম্বা ও বিচি শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের মতো গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। ফুলকপির পিস ৩০-৪০ টাকা এবং বাঁধাকপির পিস ৩০-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় থাকা অন্য সবজির মধ্যে মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, শাল গমের (ওল কপি) কেজি ৩০-৪০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১০-১৫ টাক বিক্রি হচ্ছে। আর পালন শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।
রামপুরার ব্যবসায়ী আলম বলেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ইতোমধ্যে পাকা টমেটোর দাম কমে গেছে। আমাদের ধারণা অল্প কিছুদিনের মধ্যে অন্যান্য সবজির দাম কমে যাবে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ মাছগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামও পরিবর্তন আসেনি।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ