প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা এবং রূপালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শিগগির বোর্ড সভার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
গুরুতর অপরাধ করায় ওই কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক দুটির একাধিক দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার ব্যাংক দুটির সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনতা ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। কোনো অনিয়ম করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমাদের বোর্ড থেকে শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, এটা ব্যাংকের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হবে। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হিসাব তাদের কাছে।
রূপালী ব্যাংকের দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ গুরুতর এমন অপরাধ করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত হন। পরে তার অপরাধ প্রমাণ হলে তিনি আর যোগদান করতে পারবেন না। আমাদের ওই কর্মকর্তাকেও গ্রেফতার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে কিছু নিয়ম-রীতি রয়েছে, বোর্ড তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
অন্যদিকে, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে পূবালী ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমানকেও বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি।
গত ৬ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ডিবি তেজগাঁও বিভাগের জোনাল টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।
ওই টিমের হাতে প্রথমে গ্রেফতার হন প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মূলহোতা আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল (৩৪), রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন (৩০), পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও নিয়োগপ্রার্থী স্বপন।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত পাঁচটি ব্যাংকের এক হাজার ৫১১টি অফিসার (ক্যাশ) শূন্যপদের নিয়োগ পরীক্ষা গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে ১৮৩টি, জনতা ব্যাংকে ৫১৬টি, অগ্রণী ব্যাংকে ৫০০টি, রূপালী ব্যাংকে পাঁচটি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে সাতটি পদ রয়েছে।
ওইদিন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পুরো পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লা ইউনির্ভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ