ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অনিয়মের ঋণ নিয়ে নতুন নির্দেশনা

প্রকাশনার সময়: ০৫ অক্টোবর ২০২১, ০৬:২০

‘অন্যান্য সম্পদ’-এর শ্রেণিকরণ এবং সংস্থান নিশ্চিতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জালিয়াতি, ডাকাতি ও অর্থ আত্মসাৎ এখন থেকে খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে। জালিয়াতির অর্থ আদায়ের সম্ভাবনা না থাকলে পুরো অর্থ বা শতভাগই সংস্থান সংরক্ষণ (প্রভিশন) করতে হবে। তবে আদায়ের সম্ভাবনা থাকলে সংরক্ষণ করতে হবে ৫০ ভাগ। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অসমন্বিত অগ্রিম দফা, অসমন্বিত অগ্রিম আইনি খরচ, তছরূপকৃত অর্থ বা প্রটেস্টেড বিল এবং অন্যান্য ব্যয় বা ক্ষতিবাচক দফা প্রকৃতপক্ষে সম্পদ না হওয়ার পরও ‘অন্যান্য সম্পদ’ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের বার্ষিক আর্থিক বিবরণীতে ‘অন্যান্য সম্পদ’-এর শ্রেণিকরণ এবং সংস্থান নিশ্চিত করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে অগ্রিম প্রদত্ত বেতন-ভাতা, ভ্রমণ ব্যয়, আপ্যায়ন ব্যয়, বিজ্ঞাপন ব্যয়, ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যয় ১২ মাস বা তার বেশি সময় অসমন্বিত অবস্থায় থাকলে তা ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ (খেলাপি) করতে হবে। পাশাপাশি এ ধরনের ব্যয়ের বিপরীতে ১০০ শতাংশ অর্থ সংস্থান হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। অসমন্বিত অগ্রিম আইনি খরচ যে কোনো অনিষ্পন্ন আইনি ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা বিদ্যমান থাকায় এ সংশ্লিষ্ট অসমন্বিত আইনি ব্যয় ‘সন্দেহজনক’ মানে শ্রেণিকৃত হবে এবং এসব ব্যয়ের বিপরীতে ৫০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে বলেও নির্দেশনায় বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কোনো নিষ্পন্ন আইনি ব্যবস্থার বিপরীতে অসমন্বিত ব্যয় থাকলে সেগুলোকে ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ করে এসব ব্যয়ের বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জালিয়াতি, ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ, তহবিল তছরূপ এমন সব বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হিসেবের জন্য এ ধরনের খাত বা সম্পদ সৃষ্টি করা হয়। গুণগত মাপকাঠির ভিত্তিতে বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রোটেস্টেড বিল থেকে আদায়ের সম্ভাবনা থাকলে তা ‘সন্দেহজনক’ মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ৫০ শতাংশ অর্থ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে। তবে প্রোটেস্টেড বিল থেকে অর্থ আদায়ের কোনো সম্ভাবনা না থাকলে তা ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে। ‘অন্যান্য সম্পদ’ হিসেবে প্রদর্শিত অন্যান্য ব্যয় বা ক্ষতিবাচক দফাগুলোকে ‘মন্দ ও ক্ষতি মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে।

এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্রিম প্রদত্ত বেতন-ভাতা, ভ্রমণ ব্যয়, আপ্যায়ন ব্যয়, বিজ্ঞাপন ব্যয়, ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যয়সহ অসমন্বিত অন্যান্য ব্যয় এখন থেকে আর সম্পদ হিসেবে প্রদর্শন করা যাবে না। এসব ব্যয়ের বিপরীতেও ভিন্ন ভিন্ন হারে প্রভিশন সংরক্ষণ (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করতে হবে। সার্কুলারে বলা হয়, অগ্রিম বেতন-ভাতা, ভ্রমণ ব্যয়, আপ্যায়ন ব্যয়, বিজ্ঞাপন ব্যয়, ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যয় প্রভৃতি ১২ মাস বা তার বেশি সময় অসমন্বিত অবস্থায় থাকলে তা ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণপূর্বক এ ধরনের দফাগুলোর বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।

একইসঙ্গে যে কোনো অনিষ্পন্ন আইনি ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা বিদ্যমান থাকায় এ সংশ্লিষ্ট অসমন্বিত আইনি ব্যয় ‘সন্দেহজনক’ মানে শ্রেণিকৃত হবে এবং এসব ব্যয়ের বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো নিষ্পন্ন আইনি ব্যবস্থার বিপরীতে অসমন্বিত ব্যয় থাকলে সেগুলোকে ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ করে এসব ব্যয়ের বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া জাল-জালিয়াতি, সংঘটিত ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ, তহবিল তছরূপ প্রভৃতি তাৎক্ষণিকভাবে হিসাবায়নের জন্য এ ধরনের খাত বা সম্পদ সৃষ্টি করা হয়। গুণগত মাপকাঠির ভিত্তিতে বিচার-বিশ্লেষণপূর্বক প্রোটেস্টেড বিল হতে আদায়ের সম্ভাবনা থাকলে তা ‘সন্দেহজনক’ মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ৫০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ