ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পুঁজিবাজারে মাফিয়াদের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

প্রকাশনার সময়: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩১

পুঁজিবাজারের মাফিয়াদের বিরুদ্ধে হাজার-হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ তদন্তের অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে অভিযোগের আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর পক্ষে এ অভিযোগের আবেদন করেন হেলাল উদ্দিন আকন। আবেদনে পুঁজিবাজারের মাফিয়াদের দুর্নীতির অভিযোগের আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান করার আহ্বান জানানো হয়।

আবেদনে বলা হয়েছে- আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ৯০ দশক থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যেসব মাফিয়া পুঁজিবাজারকে কুক্ষিগত করে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে,তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করছি, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ব্যবহার করে হাজার-হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিশ্বস্ত কিছু মাফিয়া চক্র এবং সরকারি সংস্থা, তারা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ব্যবহার করে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করে, আইনের তকমা লাগিয়ে বিভ্রান্ত করে রেখেছিল, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ হওয়া উচিত ছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থার স্থান, কিন্তু সেখানে খোদ বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ অবৈধ কমিশন বাণিজ্য এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত, এ মাফিয়া চক্রের মূল হোতা সালমান এফ রহমান (চেয়ারম্যান, বেক্সিমকো গ্রুপ), মিনহাজ মান্নান ইমন (পরিচালক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বে লিজিং সিকুরিটিজ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক), নাফিজ শারাফাত (রেইজ মিচুয়াল ফান্ড), হাসান রাজা (চেয়ারম্যান ইউনাইটেড গ্রুপ ), আজীজ খান (চেয়ারম্যান ,সামিট গ্রুপ ), মো. ইউনুস (চেয়ারম্যান, সোনালি পেপার অ্যান্ড বোড মিলস লি.), ওবায়েদুল করিম (চেয়ারম্যান, ওরিয়ন গ্রুপ) এবাদুল করিম (চেয়ারম্যান, বিকন ফার্মা লি.), নজ্রুল ইসলাম মজুমদার (সাবেক চেয়ারম্যান, এক্সিম ব্যাংক লি.), শেখ কবির (প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন), হাসান ইমাম (রেইজ মিচুয়াল ফান্ড), রাজিব আল মামুন (ইউনাইটেড সিকিরিটিজ লি. পরিচালক এবং উত্তরা ফাইন্যন্স এর ৫৪০০ কোটি টাকা স্ক্যামের মাস্টার মাইন্ড ), আলমগীর কবির (সাবেক চেয়ারম্যান, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লি.), নুরুদ্দিন মো. সাদেক হোসেন (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লি.), সাইদুর রহমান (সাবেক ইস্টার্ন ব্যাংক সিকিরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বর্তমান স্কাই লাইন সিকিউরিটিজের মালিক এবং শতাধিক ভুয়া কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার কারিগর), ওয়ারেস উল মতিন (সাবেক সিনিয়র এক্সকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লি.) রাশেদুল ইসলাম (সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সি এফ ও ,ফিনেন্সিয়াল কন্ট্রোল ও একাউন্ট ডিভিশন, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লি.), জেসমিন সুলতানা লাকী (সিনিয়র এসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লি.), রাজীব আহমেদ (সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিস লি.), জাভেদ অপেনহেগেন (চেয়ারম্যান, এস এস স্টীল লি.) মো. আবু বকর , (এমডি, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিস লি.), হুমায়ুন কবীর (সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট , সাউথ ইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল লি.), মোহাম্মদ ইবনে রিয়াজ (সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাউথ ইস্ট সার্ভিস ক্যাপিটাল লি.), শাকিল রিজভী (ব্যবস্থাপনা পরিচালক,শাকিল রিজভী স্টক লি. ), আহমেদ রশিদ লালী (এক্স পরিচালক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ), মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স লি.), ইঞ্জিনিয়ার কুতুবুদ্দিন আহমেদ (চেয়ারম্যান, শেলটেক ব্রোকারেজ লি.), মইন উদ্দিন (পরিচালক ,শেলটেক ব্রোকারেজ লি.) এবং আবুল খায়ের হিরু (ডেপুটি রেজিস্টার, সমবায় মন্ত্রণালয়)।

বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এ কর্মকর্তারা সরাসরি বাজারের মাফিয়া এবং জুয়ারিদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। বাজারের যেসব বস্তাপচা বন্ধ কোম্পানি আছে সেগুলো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে উচ্চ মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীকে শেয়ার গুছিয়ে দিয়েছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে।

আওয়ামী সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে উপরোক্ত ও নিম্নে বর্ণিত নামগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন ।

বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মকর্তাদের নাম-

১। প্রফেসর ড. খাইরুল হোসেন (সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন )

২। প্রফেসর শিবলী রুবাইয়ত ইসলাম (সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন)

৩। ড. শেখ শামসুদ্দিন (সাবেক কমিশনার, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন)

৪। প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান (সাবেক কমিশনার, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন, নগদ ১৫ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন ইউএফএস মিচুয়াল ফান্ড থেকে , সেই টাকা পাচার করেছে অষ্ট্রেলিয়ায় নিজ স্ত্রীর কাছে , সে ওখানে স্টুডেন্ট ভিসা পরিবর্তন করে ইনভেস্টর ভিসা করেছেন , এই টাকা পেয়ে)

৫। মহসিন চৌধুরী (বর্তমান কমিশনার, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন)

৬। এটিএম তারেকুজ্জামান ( সাবেক কমিশনার, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ)

৭। আনোয়ারুল ইসলাম (এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন)

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তাদের নাম-

১. মিনহাজ মান্নান ইমন (পরিচালক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

২. খায়রুল বাশার আবু তাহের (চিফ রেগুলারিটি অফিসার, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

৩. মো. বজলুর রহমান (অ্যাসিস্টেন্ড জেনারেল ম্যানেজার, মনিটরিং, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

৪. মো. ইকরাম হসেন (ম্যানেজার, মনিটরিং, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

৫. মো. জাকির হোসেন (সিনিয়র এক্সকিউটিভ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

৬. মো. আব্দুর রাজ্জাক (ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার, কমন সার্ভিস, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

৭. ফাহমিদা খাতুন (ম্যানেজার, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি.)

এ মাফিয়া গ্যাংরা হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। এ মাফিয়া চক্র ১৩০টি ভুয়া কোম্পানি শেয়ার বাজারে বিগত সরকারের প্রভাব খাটিয়ে তালিকা ভুক্ত করেছে এবং অভিনব কারসাজির মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে এ বাজে কোম্পানির শেয়ার উচ্চ মূল্য করে, যা আইন বহির্ভূতভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চক্রটি ২৫০টি ব্রোকার হাউসের কাছে আতঙ্কের নাম, প্রতিটি ব্রোকার হাউস থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা উত্তোলন করে তারা । যদি কোনো ব্রোকার হাউস চাঁদা দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনের তকমা দিয়ে হেনস্থা করতো, তাদের নির্দিষ্ট শেয়ার শুধু মার্কেটে বাড়তে পারবে, অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার বাড়তে পারবে না, উদাহরণ- বেক্সিমকো ১২ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, বিকন ফার্মা ১১ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, সী পাল ১১ টাকা থেকে ৩২০ টাকা, এমারল্ড অয়েল ১০ টাকা থেকে ১৮২ টাকা, লাভেলো ১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, তুন হাই (বন্ধ কোম্পানি, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত) ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, জি এম জি এয়ারলাইন্স ৫০০০ কোটি টাকা প্লেসমেন্ট, টাকার হদিস নাই , সালমানের ফাঁকি)

আরও বহু বাজে কোম্পানির মাধ্যমে এ মাফিয়া চক্র সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে লোভনীয় প্রলোভন দেখিয়ে, উল্লেখ্য এ মাফিয়া চক্র ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে, তাদের মতে আইন তাদের পিছনে ঘুরে এবং তারা কোন সরকারকেই ভয় করে না।

অভিযোগে বলা হয়েছে, এ মাফিয়া চক্র বাংলাদেশের স্বনামধন্য কোম্পানি ‘গ্রামীণফোন’ বাংলাদেশ পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত অন্যতম বিদেশি প্রতিষ্ঠান, যা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিগত সরকারের প্রভাব খাটিয়ে দখল নেয়ার চেষ্টা করেছিল, তারা এ কোম্পানির নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সেবা বন্ধ করে কোম্পানিটিকে হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ