ডিমের বাজারে গত কয়েক দিন ধরে নতুন করে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বর্তমানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ১৫০ টাকা। এছাড়া প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা বেড়ে এখন ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে কেবল নিম্নবিত্তই নয়, মধ্যবিত্তও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সামর্থ্য না থাকায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এখন মাছ-মাংস কিনতে পারছেন না। বস্তুত যারা পুষ্টির জন্য ডিমের ওপর নির্ভরশীল, তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি হালি ডিমের দাম ৫ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজার থেকে কিনলে ডিমের ডজন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, আর খুচরা দোকানে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কেনাকাটা করতে আসা এক গৃহিণী বলেন, বাজারের সবকিছুর দাম এখন বেশি। ডিমের হালি যদি ৬০ টাকা হয় তাহলে আমরা কি খাব। সবজির দামও বেশি রাখছে বিক্রেতারা। আমরা সাধারণ ক্রেতারা অসহায়।
মগ বাজারের একজন ডিম বিক্রেতা বলেন, প্রায় একমাস ধরে ডিমের বাজার অস্থির হয়ে রয়েছে। ফার্মের মুরগির একটি ডিম পাইকারিতে কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকারও বেশি দামে। সামান্য লাভে বিক্রি করলেও প্রতি ডজনের দাম ১৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে খুচরায় প্রতি ডজন ১৬৫ টাকার কমে বিক্রি করলে লোকসান হয়।
রাজধানীর ডিম ব্যবসায়ী আব্দুর করিম বলেন, উৎপাদন খরচ নির্ধারণ না হওয়ায় ডিমের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিমের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হাত নেই।
পাইকারি ডিম বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া এপ্রিল-মে মাসে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা। অতি গরমে অনেকের খামারে মুরগি মারাও গেছে। যার প্রভাব পড়েছে ডিমের বাজারে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে গত ১০ অর্থবছরে ডিম ও দুধ উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ সময়ে মাংস উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ১৭ কোটি, যা এখন বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৩৩৮ কোটি।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ