চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) প্রবাসী আয় এসেছে ১ হাজার ৭০৭ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে একক জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে চট্টগ্রাম জেলার মাধ্যমে।
এ জেলার প্রবাসীরা ১৬৫ কোটি ছয় লাখ মার্কিন ডলার। পরের স্থানেই আছে সিলেট। সিলেটের প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৯৯ কোটি ৭৯ লাখ মার্কিন ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে কুমিল্লা জেলায়। এ জেলার প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৯০ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার।
অপরদিকে, সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট ও রাঙামাটি জেলায়।
এ তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগের।
বিদেশে কোটির ওপরে মানুষ কর্মরত আছেন। এর অর্ধেক প্রবাসী ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধভাবে তাদের আয় পাঠিয়ে থাকেন। পাঠানো আয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবায়ন করে থাকে। এর বাইরে প্রায় সমপরিমাণ আয় আসে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও হুন্ডির মাধ্যমে।
বৈধভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা প্রবাসী আয় ডলারের মাধ্যমে আসে। এসব ডলার সংশ্লিষ্ট ব্যাংক রেখে সমপরিমাণ টাকা দেশে স্বজনের কাছে দেয়। যে ডলার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর একটি অংশ রেখে বাকিটা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে। সোয়াপের মাধ্যমে টাকার সঙ্গে বদলও করে থাকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাবে এই ডলার ব্যবহার করে থাকে।
অন্যদিকে, হুন্ডির মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয় হুন্ডি কারবারির প্রতিনিধিরা বিদেশে ডলার সংগ্রহ করে দেশে তাদের অংশীদারদের কাছে খবর পাঠিয়ে দেয়। আর দেশের অংশীদাররা সমপরিমাণ টাকা প্রবাসীর স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ফলে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠালে স্বজনরা টাকা পেলেও দেশ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হয়।
কোন জেলায় সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় এলো তার নির্ভর করে প্রবাসীরা বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো আয় গণনা করে। অবৈধ পথে আসা আয় হিসাবের বাইরে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ঢাকার বাইরে কুমিল্লা জেলায় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসে চট্টগ্রামের জেলায়। এরপরের দুই বছর সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসে চট্টগ্রাম জেলায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসে কুমিল্লার মাধ্যমে। চলতি বছরও সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের মর্যাদা ধরে রাখে চট্টগ্রাম জেলা।
জুলাই-মার্চ এই ৯ মাসে রাজধানী ঢাকায় এসেছে ৫৮৯ কোটি ৮১ লাখ ডলার, যা চট্টগ্রামের চেয়েও বেশি। কিন্তু রাজধানী শহর হিসেবে অনেকেই ঢাকায় রেমিট্যান্স পাঠায়, যার বড় অংশই বিভিন্ন জেলায় চলে যায়।
অন্যদিকে, সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় আসে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট আর পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি জেলায়। জেলা দুটিতে চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) প্রবাসী আয় আসে যথাক্রমে এক কোটি ৪০ লাখ ও এক কোটি ৩২ লাখ মার্কিন ডলার।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ