ঈদকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স প্রবাহে সবসময় গতি এলেও এবার দেখা গেছে উল্টো চিত্র। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দরে বড় পার্থক্য থাকায় হুন্ডিতে ঝুঁকছেন প্রবাসীরা। অন্যদিকে, রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক ধারা থাকলেও পরিসংখ্যান নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলে আসছেন উদ্যোক্তারা। সাধারণত, উৎসবের আগে স্বজনদের জন্য তুলনামূলক বেশি অর্থ পাঠান প্রবাসীরা। যেই প্রবণতা দেখা গেছে আগের বছরগুলোর ঈদ কিংবা অন্যান্য সময়ে। কিন্তু হতাশ করেছে সবশেষ মার্চের রেমিট্যান্স প্রবাহ। মাসের ব্যবধানে তো বটেই, বছর ব্যবধানেও কম অর্থ পাঠিয়েছেন বিদেশে থাকা কর্মীরা। অথচ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসাবে, ২০২৩ সালে ১৩ লাখের বেশি শ্রমিক গেছেন বিভিন্ন দেশে কাজের খোঁজে। প্রশ্ন হলো, কেন দেখা যাচ্ছে না সেই প্রতিফলন?
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আরও রেমিট্যান্স আসা উচিত ছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম, আড়াই বিলিয়ন ডলার আসবে। কিন্তু এসেছে ২ বিলিয়নেরও কম। সেটা হতাশাজনক বটে। মূলত, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বাজারে ডলারের দামের বিশাল পার্থক্যে এই তারতাম্য দেখা দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আমি মনে করি; ঈদের আগে প্রত্যাশা অনুযায়ীই রেমিট্যান্স এসেছে। অবশ্য ঈদে একটু বাড়তি আসে। তবে যখন সেটা এসেছে, তখনও ঈদের ১০-১১ দিন বাকি ছিল।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মার্চে ৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছে ইপিবি। আমার মনে হয়, এতে সরকার ও জনগণ বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। আসলে সংখ্যাটা তা কি না, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বাস্তব চিত্রটা ততটা নয়। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে পোশাক খাতের রপ্তানি স্বস্তি দিলেও বড় পতন অব্যাহত রয়েছে সম্ভাবনাময় হোম টেক্সটাইলে। এছাড়া ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পাট কিংবা চামড়া খাতও। উল্লেখ্য, ১১৪ টাকা দরে রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে ব্যাংক। আর কার্ব মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে ১২৩ টাকা। ফলে সেদিকেই ঝুঁকছেন প্রবাসীরা।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ