ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাড়ছে বিয়ের ঋণ-হিসাব 

প্রকাশনার সময়: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৪১ | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৪৫

মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। কেউ বাড়ি করতে, কেউ বা গাড়ি কিনতে অথবা কেউ আবার ঋণ নেয় ব্যবসা করার জন্য। চিকিৎসা এবং শিক্ষার জন্যও মানুষ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। কিন্তু বিয়ে করার জন্যও মানুষ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়! শুনতে অবাক লাগলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। এমনকি বিয়ের জন্য ঋণ নেয়ার হার দিন দিন বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে বিয়ে ঋণের জন্য হিসাব খোলার সংখ্যাও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত বিয়ের জন্য মানুষ ভোক্তা ঋণ নিয়ে থাকে। ভোক্তারা নানা প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। এর মধ্যে বিয়ে ঋণও একটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন শেষে বিয়ে করার জন্য নেয়া ঋণের স্থিতি ছিল ৪৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আর তিন মাস পর অর্থাৎ সেপ্টেম্বর শেষে বিয়ে করার জন্য নেয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিয়ে করার জন্য নেয়া ঋণ বেড়েছে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন শেষে বিয়ের হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৪২টি। আর সেপ্টেম্বর শেষে এ খাতের হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৭৮টি। সেই হিসাবে তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিয়ের ঋণ নেয়ার জন্য খোলা হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ২৬টি। অপরদিকে গড়ে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিয়ের জন্য ঋণ নিয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা করে। বিয়ের জন্য নেয়া ঋণ বিষয়ে কথা বললে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিয়ে করার জন্যও ব্যাংক ঋণ আছে।

এটা ভোক্তা ঋণের একটি অংশ। ভোক্তারা বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। এর মধ্যে বিবাহও একটা। তিনি বলেন, দেখা গেছে একটা ছেলের বিবাহ করার সময় হয়ে গেছে। কিন্তু বিয়েতে যে খরচ হবে সেই পরিমাণ টাকা তার কাছে নেই। তখন হয়তো ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করে। বিয়েতে আসবাবপত্র ও ফার্নিচার কেনাসহ আরও বিভিন্ন খরচ করতে হয়।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন শেষে শিক্ষা বাবদ খরচের জন্য নেয়া ঋণের স্থিতি ছিল ১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। আর তিন মাস পর (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ খাতের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪০ কোটি। জুন শেষে শিক্ষা বাবদ নেয়া ঋণের হিসাব সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ১৮০টি। আর তিন মাস পর (জুলাই-সেপ্টেম্বর) হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৯৪টিতে।

প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালের জুন শেষে চিকিৎসা বাবদ খরচের জন্য নেয়া ঋণের স্থিতি ছিল ২০ কোটি টাকা। আর তিন মাস পর (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ খাতের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি। জুন শেষে চিকিৎসা বাবদ নেয়া ঋণের হিসাব সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৭৮টি। আর তিন মাস পর (জুলাই-সেপ্টেম্বর) হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৭৮টিতে। তবে বিয়েতেও যে ঋণ নেয়া যায়— বিষয়টি গ্রাহক জানেন না বলে মনে করেন ব্যাংকাররা।

আবার ব্যাংকাররাও অনেক ক্ষেত্রে বিয়েতে ঋণ দিতে আগ্রহী হন না। বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকাররা বলেন, তারা অনেক ক্ষেত্রে বিয়ের জন্য ঋণ দিতে চান না। আবার অনেক গ্রাহকের ধারণা, বিয়ের জন্য ঋণ চাইলে ব্যাংক তাদের ঋণ না-ও দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে তারা ভোক্তাঋণ হিসেবে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বিয়ের খরচ মেটান। তাই কিছু ঋণ বিয়ের ঋণের স্থিতিতে যুক্ত হয় না।

ব্যাংকগুলো শুধু যে বিবাহের জন্যই ঋণ দেয় তা নয়, এ জন্য তাদের সঞ্চয়ী পণ্যও আছে। যেমন ঢাকা ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক মুদারাবা বিবাহ আমানত সংগ্রহ করে থাকে। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের আছে বিবাহ সঞ্চয়ী স্কিম। ব্যাংকগুলো বিয়ের জন্য যে ঋণ দিয়ে থাকে, তা ভোক্তাঋণের মধ্যে পড়ে। ব্যাংকগুলো সাধারণত এই খাতে ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ