আগের বাড়তি দামেই স্থির রয়েছে ডালের দাম। তবে মানভেদে কেজিতে ছোলার দাম কমেছে ৪ থেকে ৫ টাকা। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ভোগ্যপণ্যের বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
ডালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, মুগডাল (মোটা) কেজি ১৪০ টাকা, মুগডাল (চিকন) ১৭০, মটরডাল ৭০, মোটা মসুরডাল (অস্ট্রেলিয়ান) ১০২, মসুরডাল (চিকন) ১২৮, ছোলা মানভেদে ৯৮ ও ৮৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, আগে বিক্রি হয়েছিল মুগডাল (মোটা) কেজি ৮৭ টাকা, মুগডাল (চিকন) ১২২, মটরডাল ৫৩, মোটা মসুরডাল (অস্ট্রেলিয়ান) ৮৬, মসুরডাল (চিকন) ১১৭ এবং ছোলা মানভেদে ১০২ এবং ৯০-৯২ টাকা।
খাতুনগঞ্জের উফশী ট্রেডার্সের মালিক দীপন মহাজন বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে সব ধরনের ডালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল মুগ ডালের দাম। এর মধ্যে মোটা দানার মুগডাল কেজিতে বেড়েছে ৫৩ টাকা আর চিকন দানার মুগডাল বেড়েছে ৪৮ টাকা। তবে এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া দামই এখন স্থির রয়েছে। আর বাড়েনি।’
তিনি জানান, ছোলার দাম একটু কমেছে। আগে ছোলা মানভেদে কেজিতে বিক্রি হয়েছিল ১০২ টাকা যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৯২ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাইরে থেকে পণ্য (ডাল-ছোলা) না এলে আবার রমজানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে। বর্তমানে আড়তেও কোনো পণ্য নেই। এছাড়াও রমজানে বাড়তে পারে বিভিন্ন মসলার দাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন,‘এখন খাতুনগঞ্জের ব্যবসা চলে গেছে মাফিয়াদের হাতে। বিশেষ করে সোনা মার্কেটের সামনে স্লিপ বিক্রি করে নানা কারসাজি করা হয়। পণ্য পণ্যের জায়গায় থাকে। তারা শুধু কাগজের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।’
রমজানকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে জিনিসপত্র (ডাল-ছোলা) না এলে আবারও রমজানকে কেন্দ্র করে দাম বেড়ে যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলমান শৈত্যপ্রবাহ এবং পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বেচা-বিক্রি কমে গেছে। যারা আগে এক বস্তা-দুই বস্তা করে ডাল নিয়ে যেত তারাও নিতে আসছে না। কারণ, একদিকে শৈত্যপ্রবাহ আবার অন্যদিকে বাড়তি দামে পণ্য নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা নেই অনেকের। পণ্যের দাম বেড়ে গেছে, আয় তো বাড়েনি। আয় না বাড়লে বাড়তি দামে জিনিস নিবে কিভাবে।’
এদিকে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানকে কেন্দ্র করে খাতুনগঞ্জে পণ্যের সরবরাহ বেড়ে গেছে। তাই রমজানে পণ্যের দাম বাড়ার কোনো শঙ্কা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে অনেক খরিদদার খাতুনগঞ্জে আসতে পারছে না। বলতে গেলে খাতুনগঞ্জে এখন বেচা-বিক্রি অনেক কম। আর বেচাবিক্রি না থাকার কারণে পণ্যের দাম কমে যাচ্ছে। রমজানকে কেন্দ্র করে সব ধরনের পণ্য খাতুনগঞ্জে সরবরাহ হচ্ছে। আর সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে মালের দাম কমে যাচ্ছে। আমাদের কোনো পণ্যের সংকট নেই।’
ব্যবসায়ী মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘সপ্তাহখানে আগে যেভাবে ডালজাতীয় পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল। তা আর বাড়েনি। বর্তমানে এখন আরও কমে গেছে। যে ছোলা গতকালও বস্তাপ্রতি ৩৬শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তা এখন ৩৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মটর ডাল আগেরদিন কেজিতে বিক্রি হয়েছিল ৬৭ টাকায় তা আজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকায়। চলমান শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব শুধু চট্টগ্রামে নয় সারা বাংলাদেশে পড়েছে।’
নয়াশতাব্দী/ডিএ/একে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ