ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করা 

প্রকাশনার সময়: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৪৯

১৫ বছর আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন টানা চার মেয়াদের মধ্যে প্রথমবার ক্ষমতা গ্রহণ করে, তখনো বিশ্ব ছিল অর্থনৈতিক মন্দায়। এর সুফল পেয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগের দুই বছর সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার খাদ্যের দাম নিয়ে মহাসংকটে ছিল। কিন্তু যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তত দিনে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার সুফল পেয়েছিল বাংলাদেশের মতো স্বল্প আয়ের দেশগুলো। এতে খাদ্যের দাম কমে যায়। হ্রাস পায় মূল্যস্ফীতির চাপ। ফলে নতুন সরকারের সামনে বড় কোনো সংকট ছিল না; বরং দায়িত্ব নিয়েই ডিজেল ও সারের দাম কমানো হয়। এতে লাভবান হন বোরো ধানের কৃষকেরা।

২০১৪ সাল অবশ্য অতটা মসৃণ ছিল না। বিশেষ করে টানা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাতে অর্থনীতির ক্ষতি ছিল ব্যাপক। ফলে বিনিয়োগ নিয়ে আশঙ্কাই ছিল বেশি। তবে সহিংসতায় ক্ষতি হয়েছে—এই সুযোগ নিয়েই শুরু হয়েছিল খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার মহোৎসব। এরই মধ্যে অর্থনীতি দেখে ফেলেছে বড় বড় অনেক ঋণ কেলেঙ্কারি। হল-মার্ক, বেসিক ব্যাংক ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি ঘটে প্রথম মেয়াদেই। পরের পাঁচ বছর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই, একই সঙ্গে দুর্বল হয়েছে আর্থিক খাত।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ঝিমিয়ে পরা অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করাই নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের পরামর্শ, আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর হওয়ার বার্তা দিতে হবে সব মহলকে। দেশের অর্থনীতির সংকট যেন কাটছেই না। বিদেশি বিনিয়োগের খরা দীর্ঘদিনের। জিডিপির অনুপাতে দেশি বিনিয়োগও স্বস্তিদায়ক নয়। বছর শেষে রপ্তানি, রেমিটেন্সের সূচকও নিম্নমুখী। সাথে ভয়াবহ ডলার সংকট পরিস্থিতিকে করেছে আরও ঘোলাটে।

এমনই সব পুরোনো চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়েই যাত্রা শুরু করল নতুন সরকার। যেখানে বদলে গেছে অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মূল কাণ্ডারি। প্রশ্ন হলো এমন পরিবর্তনে কতটুকু বদলাবে দেশের অর্থনীতি? নাকি ভাবতে হবে কৌশল নিয়ে? বাংলাদেশ ব্যাংক সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন সরকার এসেছে।

এখন কীভাবে অর্থনীতিকে আরও উজ্জীবিত করা যায়। মন্থর হয়ে গেছে অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে প্রাইভেট সেক্টরে। মূল্যস্ফীতির এবারও চ্যালেঞ্জ, মূল্যস্ফীতি বাড়াতে হলে সরবরাহ বাড়াতে হবে, পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। তবেই কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমবে। দেশে রেমিট্যান্স, প্রবাসী আয় বাড়াতে হবে।

পাহাড়সমান খেলাপি ঋণ, ঋণ বিতরণে অনিয়ম দিন দিন ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর দুর্বল হয়ে পরা, দিচ্ছে না ভালো বার্তা। তাই এই অর্থনীতিবিদের মতে, আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিশন গঠনের বিকল্প নেই। পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যারা ফাইনালশিয়াল ক্যাম্প, ফাইনালশিয়াল ক্ষতির সঙ্গে জড়িত তারা রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত।

তো এই জায়গাগুলোতে সরকার কী করবে। সেটা সরকারকে কঠোরভাবে ভাবতে হবে। নির্মহভাবে ভাবতে হবে। এবং যদি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে তাহলে অর্থনীতির ক্ষত সারতে পারে।

নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ