দেশের অন্যতম ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক টানা ছয়টি প্রান্তিকে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী নির্ভরযোগ্য বিস্তৃত একটি অপারেটর হিসাবে বাংলালিংকের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়েছে। উন্নত ও উদ্ভাবনী ডিজিটাল সেবা প্রদানের মাধ্যেমে বাংলালিংক এই ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করেছে।
বাংলালিংকের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এরিক অস প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট অফিস, টাইগার্স ডেনে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে তৃতীয় প্রান্তিকের এই ফলাফল ঘোষণা দেন। উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান ও বাংলালিংকের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার জেম ভেলিপাসাওগ্লু।
২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির মোট আয় ১৫.১ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৫৮৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। দেশজুড়ে ৪ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহকের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলালিংকের বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা।
তৃতীয় প্রান্তিকে মোবাইল ডেটা থেকে বাংলালিংকের আয় বেড়েছে ২৮ শতাংশ। ওকলা স্পিডটেস্ট স্বীকৃত দেশের দ্রুততম ফোরজি নেটওয়ার্ক এই আয় বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
চার বছরে টানা ৭ বার ওকলা স্পিডটেস্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন উচ্চ গতির সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলালিংকের শীর্ষ অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ফোরজি ব্যবহারকারীর বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩১ শতাংশ। দেশজুড়ে বাংলালিংকের ১৫ হাজারেরও বেশি টাওয়ারের বিশাল অবকাঠামোর ফলে এই বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। এটি বাংলালিংক গ্রাহকদেরকে উচ্চ গতির সংযোগ ব্যবহারের নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা দিচ্ছে।
এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বাংলালিংকের বিভিন্ন ডিজিটাল সেবার ভূমিকা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল বিনোদনের প্ল্যাটফর্ম টফি ও দেশের প্রথম টেলিকম সুপার অ্যাপ মাইবিএল। মাইবিএল অ্যাপটি বিভিন্ন ডিজিটাল সেবাকে আগের চেয়ে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে।
বাংলালিংক গ্রাহকদের পাশাপাশি অন্যান্য মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকদের কাছেও টফি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সব নেটওয়ার্কে ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাটফর্মটি বাংলালিংকের বহুমুখী ডিজিটাল সেবা ও কনটেন্টের একটি উদাহরণ। গত বছরের তুলনায় এই বছরে টফির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭২.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাধ্যমে টফি এখন গুগল প্লে-স্টোরের সকল ক্যাটাগরির মধ্যে এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
কানেক্ট, কন্টেন্ট, কেয়ার, কমার্স, কমিউনিটি ও কোর্সের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিক্স সি মডেল’-এর মাধ্যমে মাইবিএল সুপার অ্যাপ আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গেছে। গত এক বছরে মাইবিএল এর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির হার ৪৮ শতাংশ। এই সুপারঅ্যাপ-এর মাধ্যমে সাড়ে ৭ লাখ ব্যবহারকারীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন এবং শিক্ষামূলক বিভিন্ন কনটেন্ট পৌঁছে যাচ্ছে।
বাংলালিংকের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এরিক অস বলেন, ‘বাংলালিংক বিভিন্ন রকম উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে তার ধারাবাহিকতার প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। কোটি কোটি গ্রাহকের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়ার জন্য বাংলালিংক সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উন্নত ডিজিটাল সেবা ও অভিজ্ঞতা প্রদানের মাধ্যমে বাংলালিংক প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের জীবনযাত্রার মানকে আরও উন্নত করছে। উদ্ভাবনী ডিজিটাল সেবা ও দ্রুততম ফোরজি নেটওয়ার্ক, দেশব্যাপী একটি নির্ভরযোগ্য অপারেটর হিসাবে আমাদের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করেছে। এখন আমরা প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে চাই।’
এছাড়া জনবল উন্নয়নে ধারাবাহিক বিনিয়োগও বাংলালিংক-এর প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। চাকরির ক্ষেত্রে দেশের তরুণদের পছন্দের সেরা ৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলালিংক অবস্থান করে নিয়েছে, যা পূর্বে ১৮তম ছিল।
উল্লেখ্য, বাংলালিংক দেশের অন্যতম ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়ার অপার সম্ভাবনা উন্মোচনের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনযাত্রার পরিবর্তনে বিশ্বাসী বাংলালিংক ডিজিটাল যুগের চাহিদা পূরণে সক্ষম একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হওয়ার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত। এটি নেদারল্যান্ডভিত্তিক সংযোগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ভিওন লিমিটেড-এর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যা ন্যাসড্যাক ও ইউরোনেক্সটের তালিকাভুক্ত।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ