ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বরাদ্দ কমল, পণ্য নিয়ে কাড়াকাড়ি

প্রকাশনার সময়: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:২৫
ফাইল ছবি

দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করে আসছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখীর যুগে টিসিবির পণ্য কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দিয়েছে। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে টিসিবির গাড়ির সামনে প্রায়ই ভিড় দেখা যায়। ঈদুল আজহার পর অনেক দিন বন্ধ ছিল টিসিবির পণ্য ক্রয়-বিক্রয়। গত শনিবার থেকে ফের ক্রয়-বিক্রয় শুরু করেছে সংস্থাটি। কিন্তু এ দফায় সময় বাড়িয়ে কমানো হয়েছে ট্রাকপ্রতি পণ্যের বরাদ্দ। আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

পণ্য বিক্রির বিভিন্ন পয়েন্টে এসে অপেক্ষা করেও পণ্য পাচ্ছেন না তারা। অনেকেই ফিরছেন খালি হাতে। চাহিদামতো পণ্য না থাকায় যা পাওয়া যায় তা নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি।

ডিলাররা জানিয়েছেন, আগে ট্রাকপ্রতি ১ হাজার লিটার থেকে ১২০০ লিটার তেল বরাদ্দ দেয়া হলেও এখন দেয়া হচ্ছে মাত্র ৭০০ লিটার। একইভাবে চিনি ও ডালের বরাদ্দ ২০০ কেজি কমিয়ে করা হয়েছে যথাক্রমে ৫০০ ও ৪০০ কেজি। তাদের ভাষ্য, বরাদ্দ কম থাকার কারণে অল্প সময়ে পণ্য ফুরিয়ে যাচ্ছে। আর সে কারণেই অনেক মানুষ পণ্য কিনতে না পেরে খালি হাতে ঘরে ফিরছেন।

এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, এ দফায় দুই সপ্তাহ পণ্য বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু আমরা সময় বাড়াতে বরাদ্দ কমিয়ে সে কার্যক্রম চার সপ্তাহ করেছি। আর মজুদের ওপর ভিত্তি করে বরাদ্দ বাড়ানো কমানো হয়ে থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে টিসিবির ট্রাকসেলের সামনে শতশত মানুষের দীর্ঘ লাইন। যদিও অনেক এলাকায় দুপুর পর্যন্ত টিসিবির ট্রাকের দেখাই মেলেনি। দুপুরের পর যেসব এলাকায় ট্রাক এসেছে, সেখানেই ছিল সাধারণ ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।

এর আগে সকাল থেকে রাজধানীর যেসব স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি হয়, সেখানে দীর্ঘক্ষণ সাধারণ মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর অনেকেই পান না। যারা পান তাদেরও পণ্য পেতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। পণ্য না পেয়ে অনেকেই বিরক্তি আর ক্ষোভ ঝাড়েন। এদিন রাজধানীর রামপুরা এলাকায় টিসিবির ট্রাক আসে বেলা সাড়ে ১১টায়। এরপর সেখানে দু-তিনশ’ মানুষকে লাইন ধরে পণ্য কিনতে দেখা গেছে। অনেকে দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর পাচ্ছেন সাশ্রয়ী দামের পণ্য। এর মধ্যে বরাদ্দ কম থাকায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হচ্ছে পণ্য। বাড্ডা এলাকায়ও দেখা গেছে একই চিত্র।

বাড্ডা এলাকায় জাহিদ হোসেন নামের এক ক্রেতা জানান, টিসিবিতে কম দামে পণ্য পাওয়া যায় বলে মাঝেমধ্যে কিনি। কিন্তু যেদিন একটু দেরি করি, সেদিন আর পাওয়া যায় না। মানুষের অনেক ভিড় থাকে বলে কিছুক্ষণের মধ্যেই পণ্য শেষ হয়ে যায়। অনেকে আবার কাড়াকাড়ি করেন, যা আমি পারি না। বাজারে সব পণ্যের দামই আকাশছোঁয়া। আর টিসিবিতেও আগের মতো আর পণ্য পাচ্ছি না। ফলে ওই বেশি দামেই কিনে খেতে হচ্ছে। যা আমাদের মতো মানুষের জন্য অনেক সমস্যার।

টিসিবি বলছে, এ দফায় দেশজুড়ে টিসিবির ৪০০ ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৮০টি ও চট্টগ্রাম সিটিতে ২০টি ট্রাক রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মহানগর ও জেলা শহরেও ট্রাকসেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

এসব ট্রাকে প্রতি কেজি ৫৫ টাকা দরে চিনি ও ডাল এবং লিটারপ্রতি ১০০ টাকা দরে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি টিসিবির বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে সব পণ্য। একজন ব্যক্তি দৈনিক দুই থেকে চার কেজি চিনি, দুই কেজি ডাল ও দুই থেকে পাঁচ লিটার ভোজ্যতেল কিনতে পারছেন। টিসিবির এ কার্যক্রম চলবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ