ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঋণ বেড়েছে সরকারের

প্রকাশনার সময়: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৩২

সরকারের ব্যয় দিনদিন বাড়ছে। তবে করোনার কারণে তেমনভাবে বাড়েনি রাজস্ব আদায়। অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কম হওয়ায় বেকায়দায় সরকার। সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্রমের ব্যয় মেটাতে চোখ রাখতে হচ্ছে অন্য দিকে। তবে নতুন কোনো পথ না থাকায় ঋণের দিকে ঝুঁকছে সরকার। যে কোনো সময়ের থেকে সরকার এখন ঋণ নিচ্ছে বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেই (জুলাই ও আগস্ট) ঋণ করেছে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। যদিও চলতি অর্থবছরের জন্য ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্টে সরকারের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের আগস্ট শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা।

কোভিড পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় সরকারের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে গত অর্থবছরের এই সময়ের তুলনায় প্রায় ১২.২০ শতাংশ বেড়েছে ঋণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্টে সরকারের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের আগস্ট শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা।

এদিকে চলতি অর্থবছরের দুই মাস শেষে সরকারের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। একই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করেছে ৮ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকারের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০ শতাংশ।

সরকারের চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল ব্যাংক খাত। এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার ঘাটতি বাজেট মেটাতে ব্যাংকগুলো থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়েছে, এটা ভালো দিক। সরকার ঋণ নিয়ে উন্নয়নের কাজে ব্যয় করবে, এতে দেশের কর্মসংস্থান বাড়বে, একই সঙ্গে জিডিপি বৃদ্ধি পাবে’।

গত অর্থবছরে সরকারের ব্যাংকঋণ ছিল লক্ষ্যমাত্রার অনেক নিচে। মূল বাজেটে সরকারের ব্যাংকঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। তবে সঞ্চয়পত্র থেকে প্রত্যাশার তুলনায় বেশি ঋণ আসায় সংশোধিত বাজেটে ব্যাংকঋণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭৯ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা করা হয়।

এর আগের অর্থবছরে (২০১৯-২০) সরকার ব্যাংকঋণ নিয়েছিল ৬৬ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারের ব্যাংকঋণ কিছুটা কম ছিল, ১৮ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। মূলত সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের ওঠানামার কারণে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের মধ্যে বড় ধরনের ব্যবধান দেখা যাচ্ছে।

গত অর্থবছরেও মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ ২০ হাজার কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করে সরকার। কিন্তু সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ায় সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩০ হাজার ৩০২ কোটি টাকা করা হয়। তবে জুন শেষে ওই অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ ৪১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। অর্থাৎ সংশোধিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ ঋণ বেড়েছে ব্যাংকবহির্ভূত এ খাত থেকে।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ