ঢাকার বাইরের গ্রাহকদেরও প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনছে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। প্রথম পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে বসানো হবে ১১ লাখ প্রিপেইড মিটার। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিতাস কোম্পানি এ মিটার বসানোর কাজ দ্রুতগতিতে করবে শিগগিরই। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও প্রিপেইড মিটার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির। তিতাসের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
তিতাস সূত্র বলছে, প্রিপেইড মিটারের সুবিধা হলো, গ্রাহকরা বিল দিয়ে পরে গ্যাস ব্যবহার করে। এতে বিল বকেয়া থাকার সুযোগ নেই। এছাড়া প্রিপেইড মিটার বসানোর জন্য তিতাসের ওপরের সরকারের নির্দেশনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে গড়িমসির আদ্যোপান্ত তুলে ধরে দৈনিক নয়া শতাব্দী পত্রিকায় গত ১৭ জুলাই ‘স্থাপন বন্ধ, কারণ অদৃশ্য!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, প্রথমে সীমিত পরিসরে রাজধানীতে প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ করে তিতাস। তবে গ্রাহকের চাহিদা থাকলেও পর্যাপ্ত মিটার দিতে পারছিল না কোম্পানিটি। বরং কোনো কোনো এলাকা থেকে ১০ বছরের পুরোনো মিটার খুলে আনছে সংস্থাটি। এতে ওই সব এলাকায় আবারও আগের মতো মাস শেষে বিল নিচ্ছে তিতাস। এ অবস্থায় ঢাকার বাইরের গ্রাহকদেরও প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে তিতাস কোম্পানি। সমপ্রতি বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে তিতাসের উন্নয়ন কার্যক্রমের বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে ঢাকার বাইরের গ্রাহকদেরও প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানানো হয়। জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা না প্রকাশ না করে বলেন, ‘তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ২৭ লাখ ৮৩ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে ২৭ লাখ ৬৪ হাজার গ্রাহক বাসাবাড়ির।’ জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ভিন্ন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৭ সালে ঢাকার কিছু এলাকায় প্রিপেইড মিটার বসায় তিতাস বলে জানান তিনি।
তিতাস বলছে, এ ছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ঢাকা (দক্ষিণ) এবং নারায়ণগঞ্জের জন্য আরও সাড়ে ছয় লাখ মিটার বসানো হবে। এ প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে এডিবির সঙ্গে তিতাস আলোচনা করছে। প্রকল্পটি জ্বালানি বিভাগের যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে।
এছাড়া আরও ৩ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের আঙিনায় প্রিপেইড মিটার বসানোর জন্য জাইকার অর্থায়নে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে।
এ তিনটি প্রকল্প শেষ হলে আর কতজন প্রিপেইড মিটারের আওতার বাইরে থাকবে, তা যাচাই করে আরেকটি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে, যেন সব গ্রাহক এর আওতায় আসে।
তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ মোল্লাহ বলেন, ‘আমরা প্রিপেইড মিটারের বিষয়টি গ্রাহককে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। গ্রাহক চাইলে নিজেই প্রিপেইড মিটার কিনে এনে আমাদের লোকদের দিয়ে বসাতে পারতেন। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কেউ মিটার কিনতে চায় না। এ কারণে আমরা বিনা পয়সায় গ্রাহককে মিটার সংযোজন করে দিচ্ছি।’ পর্যায়ক্রমে তিতাসের সব গ্রাহক প্রিপেইড মিটারের আওতায় আসবে বলে জানান তিনি।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ