আগামী ১লা জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলের ৪নম্বর সেক্টরে অবস্থিত বাণিজ্যমেলার স্থায়ী ভেন্যু বঙ্গবন্ধু চায়না-বাংলাদেশ এক্সিবিশন সেন্টারে বসছে এ আসর। এবারের মেলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
সেজন্য নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে স্টল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে শ্রমিকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার আগে স্টল বরাদ্দ পাওয়ায় স্টলের নির্মাণকাজ ঠিক সময়ে শেষ হবে বলে আশা করছেন স্টল মালিকরা।
গত বছর করোনা মহামারির কারনে ছোট পরিসরে এ স্থায়ী ভেণ্যুতে বসেছিল এ মেলা। তবে এবারের মেলায় গত বছরের চেয়ে একশটি স্টল বেশী বসবে। এবারের বাণিজ্যমেলায় ১২টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করছেন। মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৪২টি প্যাভিলিয়ন, ৩১টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ২৩৮টি জেনারেল স্টল এবং ২৩টি খাবারের দোকানসহ প্রায় ৩৩১ টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো(ইপিবি) ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মেলা উদ্বোধনকে সামনে রেখে সকল প্রস্তুতির কাজ চলছে তোরজোড়ে। মেলার প্রধান ফটক ও প্রবেশদ্বারে তিনটি মেগাপ্রকল্পের কাঠামো ও বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরির কাজ চলছে। অনেক স্টলের কাঠামোর কাজ শেষ করে বোর্ড লাগানো ও রং দেওয়ার কাজ চলছে। অনেক স্টলের কাঠামো দাঁড় করানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে মেলা উদ্বোধনকে সামনে রেখে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে স্টল নির্মাণের কাজ। আগামী ২৮-২৯ ডিসেম্বর স্টল নির্মান শেষ করে দোকাণ মালিকদের বুঝিয়ে দিতে পারবেন বলে জানিয়েছে নির্মাণ শ্রমিকরা। সেজন্য সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তারা। আগে স্টল বরাদ্দ পাওয়ায় স্টল নির্মাণ কাজ আগে শেষ হবে এমনকি ঠিক সময়ে দোকান চালু করতে পারবেন বলে আশা করছেন স্টল মালিকরাও।
এদিকে স্থায়ী ভেণ্যু পূর্বাচলে এ মেলা বসায় অনেক খুশি স্থানীয়রা। তারা দাবি করেন এখানে এ আন্তর্জাতিক মেলা বসায় এখানকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা একদিকে আনন্দ উল্লাস করবে অন্যদিকে এখানে বিভিন্ন স্টলে কাজ করে আর্থিকভাবেও লাভবান হবে। এছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে এখানকার লোকজন বাড়িঘর নির্মাণ করে দূরদূরান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে বাড়তি টাকা উপার্জন করবে। এমনকি এ মেলাকে ঘিরে এলাকাটাও বেশ উন্নত হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এবার মেলায় যাতে রাজধানীসহ আশেপাশের দর্শনার্থীরা আসা যাওয়া করতে পারে সেজন্য মেলায় প্রবেশের রাস্তা কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্ববরোড সড়ক পুরোটা যানচলাচলেল জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূইয়া জনান, এ বাণিজ্যমেলা দেখতে আমাদের ঢাকায় যেতে হতো। আর এ মেলা এখন আমাদের রূপগঞ্জে হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে কৃজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এখানে মেলা হওয়ায় রূপগঞ্জবাসীও বেশ সুফল পাচ্ছে। এখানকার মানুষ বিভিন্নভাবে অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এ মেলায় যেন কোন প্রকার বিশৃংখলা না হয় সেজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি আমরাও সোচ্চার আছি।
রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত বছর করোনা মহামারির কারনে এ মেলা তেমন বড় পরিসরে করা যায়নি। এবার মেলার পরিসর বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর গত বছরের তুলনায় একশটি দোকান বেশী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সড়ক ব্যবস্থাও অনেকটা ভাল। অতি সহজে দর্শনার্থীরা মেলায় আসতে পারবে। আগত দর্শনার্থীরা যেন কোন সমস্যায় না পরেন এমনকি কোন অপ্রীতিকর ঘটনাও যেন না ঘটে সেজন্য মেলায় ভেতর ও বাইরে মোতায়েন থাকবে অতিরিক্ত র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন। বাড়তি নজরধারীর জন্য মেলার ভিতরে ও বাইরের বিভিন্ন সড়কে বসানো হচ্ছে ২৭০টি সিসি ক্যামেরা।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ