ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জিপিএ-৫ পাওয়া তামান্নার কলেজে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশনার সময়: ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:৩৪ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:৩৮
পিতা-মাতার সঙ্গে মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার

পাবনার ঈশ্বরদীতে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্নার লেখাপড়া বন্ধের পথে। জিপিএ-৫ গোল্ডেন পেয়েও অর্থের অভাবে তার কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তামান্না এ বছর বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

স্থানীয়রা জানান, তামান্নার বাবা হতদরিদ্র সোলায়মান হোসেন হাটে শাক-সবজি বিক্রি করেন। সবজি বিক্রি করে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পান। এ দিয়ে সংসার তেমন চলে না। তামান্না পড়াশোনার খরচ জোগাতে প্রাইভেট পড়িয়েছেন অন্যদের।

তামান্নার পিতা জানান, আমি একজন সবজি বিক্রেতা। কখনো হাটে সবজি বিক্রি করি আবার কখনো পায়ে হেঁটে, মাঝেমধ্যে কৃষি কাজে যায়, কখনো কাজ খুঁজে পাই আবার পাই না। দিন আনি দিন খাই। আমার মেয়ে ছোট থেকেই মেধাবী। ক্লাস ফাইভ এ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল, সেখান থেকেই কিছু আর্থিক সহযোগিতা পেতো, তাতে বই-খাতা-কলম কিনা হয়ে যেতো, তখন সংসার ছোট থাকায় কষ্ট হলেও কোনোরকম মেয়েকে পড়ালিখা করাতাম। ইচ্ছা আছে মেয়েটিকে পড়ালিখা করানোর। বিত্তবান ও সরকারি সহযোগিতা পেলে মেয়েটিকে কলেজে ভর্তি করে আগামীতে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারব।

তামান্নার মা হাবিবা আক্তার শাপলা জানান, আমার মেয়ে ছোট থেকেই পড়ালিখায় ভালো, খুব অভাব-অনটনের মধ্যেই তার ইচ্ছা শক্তি দেখেছি পড়ালিখা করতে। এতদিন মেয়েকে কোনোভাবে পড়ালিখা করিয়েছি। এখন কলেজে ভর্তি হবে। পড়ালিখার খরচ ও কলেজে কিভাবে ভর্তি করবো এটা নিয়ে চিন্তায় আছি। আমার মেয়েকে পড়ালিখার বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক সহযোগিতা করেছেন।

তামান্না বললেন, এখন কলেজে ভর্তি হতে গেলে টাকা লাগবে। তাই কেউ আর্থিক সহযোগিতা করলে ভর্তি হতে পারতাম। আমার ইচ্ছে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়া।

তামান্নার শিক্ষকরা জানান, তামান্না খুবই দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। ক্লাস সিক্স থেকেই দেখছি মেয়েটি খুবই শান্ত, ভদ্র ও মেধাবী। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় লেখাপড়ায় অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকায় আমরা স্কুল থেকে তাকে সহযোগিতা করতাম। বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়ায় প্রাইভেটও ফ্রি পড়াতাম। এসএসসিতে সে খুব ভালো ফলাফল করেছে, সমাজের বিত্তবান ও সরকারি সহযোগিতা পেলে তামান্না ও তার পরিবারের স্বপ্ন পূরণ হবে।

রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবিএম আশরাফুল ইসলাম স্বপন জানান, তামান্না আক্তার একজন মেধাবী ছাত্রী। গরিব পরিবারের সন্তান হয়েও ভালো রেজাল্ট করে এখন অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্কুলে থাকাকালীন আমাদের স্কুল থেকে তাকে অনেক সহযোগিতা করা হতো।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ