১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল উপজেলার বড়তাকিয়ার সৈদালী গ্রামে পাকিস্তানি হানাদাররা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে প্রাণ হারান ওই গ্রামের ২৩ নিরীহ মানুষ।
৬ ডিসেম্বর বিক্ষিপ্ত ভাবে সমাহিত ২৩ শহীদের গণকবর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এনে সৈদালী গ্রামের সিন্ধুরা ভিটা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে ও সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হচ্ছে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শহীদদের গণকবর স্থানান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি), মিজানুর রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির হোসেন, মিরসরাই থানা অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবুল হোসেন বাবুল, মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির নিজামী, খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক, মায়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, সৈদালী নাগরিক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মায়ানী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমিনুজ্জামান মাজু, সৈদালীর ওয়ার্ড মেম্বার ইয়াছিন উল্লাহ প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ছায়া সুনিবিড় একটি গ্রাম সৈদালী। স্থানীয় মায়ানী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ চার ভাগে বিভক্ত সৈদালী গ্রামে বর্তমানে ছয় হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ হতদরিদ্র। মুক্তিযুদ্ধকালীন গ্রামের জনসংখ্যা ছিল পাঁচ শতাধিক। তার মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করে এক মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৩ জনকে। আবার ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অংশ নেন গ্রামের ২৪ কিশোর-যুবক। যাদের মধ্যে বর্তমানে ১৭ জন বেঁচে আছেন।
২০১৭ সাল থেকে সৈদালী নাগরিক ফোরাম নামে একটি সংগঠন ২০ এপ্রিল দিনটিকে সৈদালী গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। তখন থেকেই সংগঠনটির নেতাদের দাবি ছিলো অচিরেই সৈদালী গণহত্যা দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাট্যনির্দেশক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তখন সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন, ‘সৈদালী গণহত্যা দিবস এখনও রাষ্ট্রের খাতায় নেই। এটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এখানে গণকবর চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করতে হবে। না হয় আগামী প্রজন্ম এটি ভুলে যাবে।’ আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ইতিহাসে স্থান করে নিলো সৈদালী গ্রাম।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ