মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ১১ দফার দাবিতে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে এ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। এতে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এর আগে শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে নাটোর শহরে আরপি কমিউনিটি সেন্টারে এক যৌথ সভায় রাজশাহী বিভাগের মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে নাটোর শহরের বড় হরিশপুর বাইপাস, মাদ্রাসা মোড়, বেলঘড়িয়া বাইপাস, তেবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে গাড়ির জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বাস না থাকায় অনেকে জরুরি কাজ সারতে অটোরিকশা, ভ্যানে চড়ে কাজে যেতে দেখা গেছে।
তবে যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, ভাড়ার চেয়ে তিনগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের।
শহরের হরিশপুর বাইপাসে আসা যাত্রী আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমার মেয়ে খুব অসুস্থ, তাকে দেখতে বনপাড়া যেতে হবে। ভোরে ইয়াছিনপুর থেকে বের হয়ে আসি। এখানে এসে শুনলাম বাস নাকি বন্ধ। কোনো সিএনজি বাস কিছুই চলছে না। এখন কিভাবে মেয়েকে দেখতে যাবো সেই চিন্তায় বসে আছি।’
কবিতা খাতুন নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘একটি জরুরি কাজে বানিশ্বর যেতে হবে। কাল শুনেছিলাম আজ থেকে ধর্মঘট। ভেবেছিলাম সিএনজি পাওয়া যাবে। এসে দেখি সিএনজি নেই, সবকিছু বন্ধ। এখন কিভাবে যাবো তাই ভাবছি। ভ্যানে হলেও আমাকে যেতে হবে।’
আসিফ আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ী জানান, ব্যবসার কাজে বনপাড়া যেতে হবে। এসে দেখি বাসসহ কোনো যানবহন চলছে না। খুব বিভ্রান্তির মধ্য পড়ে গেছি। যেভাবে হোক আমাকে বনপাড়ায় পৌঁছাতেই হবে। এক অটোরিকসা চালকে বললাম সে ৪০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। যেখানে বাসে ৪০ টাকা ভাড়া। কিছু দিন পরপর কিসের সব ধর্মঘট হয় বুঝি না। আমরা সাধারণ মানুষ কাজ করে যে খাবো তাও পারি না।’
বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি লক্ষন পোদ্দার বলেন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ ও জ্বালানি তেলসহ ১১ দফার দাবিতে আমাদের ধর্মঘট চলছে।
এদিকে, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু জানান, এ ধর্মঘট বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে। যাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী সমাবেশে না যেতে পারে এজন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে কয়েকদিন আগ থেকেই এমন ধর্মঘটের ডাক দিয়ে আসছে। কিন্তু যতই ধর্মঘটের ডাক দিক না কেন রাজশাহী বিএনপির সমাবেশ জনস্রোতে পরিণত হবে। সরকার সমাবেশকে ঘিরে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ দেখিয়ে দেবে শত বাধা-বিপদ পেরিয়ে সমাবেশকে জনস্রোতে পরিণিত করবে ইনশাল্লাহ।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ