ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

এসএসসিতে উপজেলা সেরা তিন শিক্ষার্থীর গল্প

প্রকাশনার সময়: ৩০ নভেম্বর ২০২২, ২১:১৪

এসএসসির ফলাফলে উপজেলা শীর্ষস্থান অর্জন করেছে নাটোরের গুরুদাসপুর খুবজীপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। তাই আনন্দ-উল্লাসে মেতেছে শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বড় বড় সরকারি কর্মকর্তারা দেশের সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সচিব, আমলা, ডাক্তার, বিচারপতি, শিক্ষা ও প্রশাসন ক্যাডারে সুনামের সাথে দেশ মাতৃকার সেবা করে যাচ্ছেন।

এবছরও এসএসসির ফলাফলে উপজেলার শীর্ষস্থান অর্জন করেছে বিদ্যালয়টি। সেই সাথে উপজেলা সেরাও হয়েছেন মৌমিতা তাবাসসুম, মোঃ হুসাইন, মাইশা ফারজানা মিথি। তাই আনন্দ-উল্লাসের কমতি ছিলোনা ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মচারীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে।

২০২২ সালে এসএসসিতে ভালো ফলাফলের জন্য গুরুদাসপুর উপজেলা সেরা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া অতীতেও ফলাফলে ভালো সুনাম রয়েছে চলনবিল জুড়ে।

উপজেলা সেরা ১২৬১ নম্বর পাওয়া মৌমিতা তাবাসসুম বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকে সফল হওয়া কৃতি মানুষগুলোর কথা জেনেই মনের মধ্যে সুপ্ত বাসনা ছিল প্রথম হওয়ার। সেই থেকে সব শিক্ষকদের পরামর্শ ও নানা পরিকল্পনা করি। আমরা কি মফস্বল থেকে দেশের নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতো ফলাফল করতে পারব না? শিক্ষকরা জানালেন ইচ্ছা থাকলে ভালো ফলাফল

করা সম্ভব। তার পর আর পিছু ফিরে তাকাইনি। তাই উপজেলা সেরা হতে পেরেছি। বাবা আব্দুর রাজ্জাক ব্যাবসায়ী মা মরিয়ম গৃহিনি হলেও আমাকে সর্বদাই সহযোগিতা করে আসছে। আমার স্বপ্ন ভবিষ্যতে একজন সুনামধন্য প্রকৌশলী হবার।

উপজেলার দ্বিতীয় সেরা হওয়া আবু বক্কারের ইচ্ছাও প্রকৌশলী হওয়ার। সে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১২৫৭ নম্বও পেয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে। উপজেলার তৃতীয় স্থান অর্জনকারী মাইশা ফারজানা মিথি ১২৫৪ নম্বর পেয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। তার ইচ্ছা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার।

ভালো ফলাফলে যিনি রাতদিন কাজ করেছেন শিক্ষক অবিভাবকদের নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানালেন খুবজীপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিসুর রহমান।

তিনি জানান, এবার এসএসসিতে মোট জিপিএ ৫সহ গড় পাশের হারেও উপজেলার সেরা হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানটি। চলনবিল এলাকার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বরাবরই ভালো ফলাফল করে আসছে তবে এবছর তিনজন উপজেলা সেরা হওয়ায় সবার নজরে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের ফলাফলে উপজেলায় খুবজীপুর বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয় ৯৩.৯৮ পেয়ে প্রথম, গুরুদাসপুর সরকারী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যায় ১১৬ জন সর্বচ জিপিএ ৫সহ ৯১.৮৮ পেয়ে দ্বিতীয় এবং ৩য় বেগম রোকেয়া স্কুল এন্ড কলেজ।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত সমাবেশ, সতন্ত্র ডিবেট ক্লাব ও ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, সুসজ্জিত স্কাউট ও গার্লস গাইড, মনোরম পরিবেশে শিক্ষা দান, স্কুল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার দ্বারা হাজিরা ও ফলাফল প্রদান, সিসি ক্যামেরা দ্বারা শ্রেণি কক্ষ ও প্রতিষ্ঠান পর্যবেক্ষণ, নিয়মিত অবিভাবক সমাবেশ, শিক্ষার্থীদেরও সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ, নিয়মিত খেলাধুলার পাশাপশি গালর্স গাইড এবং বয় স্কাউটিংয়ের ধারাবাহিকতায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়েছে।

ওই প্রতিষ্ঠানের কৃতি শিক্ষার্থী ডা. সিরাজুল ইসলাম শিশির, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক। ডা. খলিলুর রহমান, বক্ষব্যধি বিশেষজ্ঞ, পাবনা। মোঃ সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মোঃ শওকত আলী, যুগ্নসচিব অর্থ মন্ত্রণালয়। ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ভিসি, অতিশদিপংকর বিশ্ব বিদ্যালয়। ড. মোঃ আমিরুলল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

ওই প্রতিষ্ঠানের আরেকজন সাবেক শিক্ষার্থী ৫ বারের সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস জানান, খুবজীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তণ শিক্ষার্থী হিসেবে চলনবিল অধ্যুসিত এই প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছি। প্রতিষ্ঠানের কলেবর বৃদ্ধিসহ উন্নয়নমূলক কাজ করেছি যাতে করে এখান থেকে মানসম্মত শিক্ষার্থী তৈরি হয়ে আমাদের মতো দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করতে পারে।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ