নড়াইলে দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমছে। যে গাছগুলো আছে তাতেও তেমন রস মিলছে না। বাজারে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও যোগান নেই। কারণ খেজুরের গুড় তৈরির কাঁচামাল খেজুরের রসের সংকট। চাহিদার সাথে যোগানের সামঞ্জস্য না থাকার সুযোগে ভেজাল গুড়ে সয়লাব হচ্ছে বাজার। ফলে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ হতে বঞ্চিত হচ্ছে বর্তমান প্রজন্ম।
নড়াইলে শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ প্রস্তত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। ভোর থেকেই ব্যস্ত গাছিরা দা দিয়ে খেজুর গাছ কাটেন। কদিন পরেই গাছ থেকে গাছিদের প্রক্রিয়াজাত করা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হবে গুড় ও পাটালি। শীতের সকালে গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে খেজুরের রস দিয়ে বানানো হবে মুখরোচক পিঠা পায়েস।
লোহাগড়া উপজেলার বয়রা গ্রামের গাছি মো. নজরুল, মশিয়ার শেখ বলেন, আমরা প্রতিবছর শীতকাল আসলেই খেজুর গাছ কাটার কাজ করে থাকি। আমি নিজের গাছ কাটার পাশাপাশি অন্যের গাছও কাটি। গাছ কাটলে টাকা পাই। প্রতিগাছের মাথা প্রতি একশ টাকা পাই। যা গতবছরের তুলনায় একটু বেশি।
উপজেলার বয়রা গ্রামের মো. মিলন শেখের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শীতকালে খেজুরের রস না হলে আমাদের একদমই চলে না। আমরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা পায়েস খেয়ে থাকি। কিন্ত ইটের ভাটায় গাছ বিক্রির কারণে দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
নড়াইল সদর উপজেলার গোপিকান্তপুরের গাছি মতিন বেগ জানান, তিনি ২০ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটেন। বাজারে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী গুড় উৎপাদন করতে পারছে না তারা।
উপজেলার সরসপুর গ্রামের গাছি রতন দাস জানান, বাজারে খেজুর গুড়ের চাহিদা আছে। এদিকে সিজনের সময়েও আগের মতো রস পাচ্ছেন না তারা। ফলে চাহিদা থাকলেও গুড় উৎপাদন করতে পারছে না। এলাকায় গাছ অনেক কমে গেছে। যা আছে তাতেও আগের মতো রস হয় না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীপক কুমার রায় জানান, নড়াইলের মাটি খেজুর গাছের জন্য খুবই উপযুক্ত। তবে দিনদিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমছে। জেলার তিনটি উপজেলায় কৃষি অফিসের উদ্যোগে জনসাধারণকে খেজুর গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ