কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ করা ১০১ ইয়াবা কারবারিকে মাদক মামলায় দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া দায়েরকৃত অস্ত্র মামলা থেকে তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরের দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আদালতে ১৭ জন উপস্থিত ছিলেন এবং বাকি ৮৪ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ফরিদুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ১০১ জনের প্রত্যেককে ১ বছর ৬ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ২০ হাজার করে জরিমানা করা হয় তাদের। এছাড়া ওই সময় দায়েরকৃত অস্ত্র মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।

আদালতের বরাতে পিপি বলেন, আদালত অবজারভেশনে বলেছেন যাতে আগামী দিনে কেউ এ পেশায় না ফিরে সে জন্য এই রায় ভূমিকা রাখবে।

এর আগে, সকাল ১১ টার দিকে আদালতে আনা হয় কারাগারে থাকা ১৭ আসামিকে। এরপর সাড়ে ১২টায় রায় পড়া শুরু হয়।

নথি পর্যালোচনায় আদালত বলেন, ২০১৯ সালেই ৩৭ জন ইয়াবা কারবারি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে তুলে ধরেন। ১৬/২/২০১৯ তারিখ ৩ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৩০ টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আত্মসমর্পণকারী আসামিরা উদ্ধারকৃত আলামত তাদের বলে স্বীকার করেন। অস্ত্র মামলায় ৩৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় আছেন, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির চার ভাই (আব্দুল আমিন, আব্দুর শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল রহমান); ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু; চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম। আরও আছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ ও তার বড় ভাই আব্দুর রহমান; বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদের ছেলে দিদার মিয়া, টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ; টেকনাফ সদর ইউনিয়নের এনামুল হক এনাম মেম্বারসহ অনেকে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে ১০২ জন ইয়াবাকারবারী আত্মসমর্পণ করে। মামলা চলাকালে সোহেল নামে এক আসামি কারাগারে মারা গেছেন। আত্মসমর্পণের পর তাদের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩০টি দেশীয় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে তৎকালীন ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা বাদী হয়ে পৃথক ২টি মামলা করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং আসামিদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা করা হয়। আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষা ফলাফল যাচাই, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়াসহ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/আরআর