ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আত্মস্বীকৃত ১০১ ইয়াবা কারবারির মামলার রায় আজ

প্রকাশনার সময়: ২৩ নভেম্বর ২০২২, ১০:৪৯
টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে আত্মস্বীকৃত ১০২ জন মাদক কারবারি আত্মসমর্পণ করেন। ২০১৯ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসের ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে প্রথম দফায় আত্মসমর্পণ করা ১০১ জন ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে দায়ের করা পুলিশের দুইটি মামলার রায় আজ (২৩ নভেম্বর) ঘোষণা হবে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল আলোচিত এ মামলাগুলোর রায় ঘোষণা করবেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আজ কারাগারে থাকা আসামিদের আদালতে হাজির করা হবে। তাদের উপস্থিতিতে মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এদিকে মামলাগুলোর ১৮ আসামি কারাগারে থাকলেও পলাতক আছেন বাকি ৮৩ জন। এদের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও রয়েছেন।

প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় আছেন, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির চার ভাই (আব্দুল আমিন, আব্দুর শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল রহমান); ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু; চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম। আরও আছেন- টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ ও তার বড় ভাই আব্দুর রহমান; বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদের ছেলে দিদার মিয়া; টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ; টেকনাফ সদর ইউনিয়নের এনামুল হক এনাম মেম্বারসহ অনেকে।

এদিকে আত্মসমর্পণ করা আসামিদের মধ্যে যাদের জামিন বাতিল করা হয়েছে তাদের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিমের কাছে। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত আদালতের কোনো আদেশ হাতে আসেনি। আদালতের আদেশ পেলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। যদিও মামলাগুলোর সর্বশেষ শুনানির দিন অনুপস্থিত থাকায় আদালত ৮৪ জনের জামিন বাতিল করেন।

টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সরওয়ার কামাল বলেন, গত ১৭ নভেম্বর থেকে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত রয়েছেন। প্যানেল চেয়ারম্যান জহির আহমেদ বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। একমাসের অধিক সময় যদি তিনি অনুপস্থিত থাকেন, তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আত্মগোপনে থাকা কয়েকজন আসামি বলেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হবে, এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছিল। এখন মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ একদল ইয়াবা কারবারি অবস্থান নেওয়ার খবরে অভিযান চালায় পুলিশ। ওই সময় পুলিশের কাছে ১০২ জন ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। পরে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে তারা আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই তাদের আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়।

থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে। মামলা দায়েরের দিনই আদালতের মাধ্যমে আসামিদের গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর পর ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহের আদালতে ১০১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

পরে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সব আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার চার্জ গঠন করেন। গত ১৫ নভেম্বর শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ