চেহারায় স্পষ্ট রোগাক্রান্ত ভাব। শ্বাসকষ্ট তবুও প্যাডেল রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন জীবিকার তাগিদে। খেয়ে বেঁচে থাকতে তো হবে। সামর্থ্য নাই রিকশা কেনার তবুও কারো কাছে হাত পাততে নারাজ তিনি। ২০ বছর যাবৎ এভাবে প্যাডেল রিকশা চালিয়েই চলছে গিয়াস উদ্দিনের সংসার।
তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের পূর্ব ধূলজুরী গ্রামে।বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব।প্যাডেল রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।
যন্ত্রচালিত রিকশা বাজারে আসার পর উপজেলায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল রিকশা। এখন হোসেনপুরের কোথাও পায়ে চালিত রিকশা নেই বললেই চলে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আসার পর থেকে প্যাডেল রিকশার জায়গা পুরোটাই দখল করে নিয়েছে।সময় বাঁচাতে সবাই ব্যাটারিচালিত রিকশা দিয়েই চলাচল করে।তাই গিয়াসউদ্দিনের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এক সময় দেখা যেত রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে সংসার চালাত শতশত মানুষ। কিন্তু বর্তমান সময়ে পায়ে চালিত রিকশা খুব একটা দেখা যায় না। একসময় পায়ে চালিত রিকশা খুব জনপ্রিয় ছিল। দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে এখন সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে হোসেনপুর উপজেলায়। কিন্তু গিয়াস উদ্দিনের মতো অর্থহীন হাতে গোনা কয়েকজনই রিকশার প্যাডেলের সাথে বেধে রেখেছেন জীবনচক্র।
জিগ্যেস করলে রিকশাচালক গিয়াস উদ্দিন প্যাডেল চালাতে চালাতে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, কোনোদিন ৮০ টেহা, কোনোদিন ১০০ টেহা, কোনো দিন খালি হাতেও বাইত যাইতে হয়। আমার প্যাডেল রিকশায় কেউ উডে না গো বাজান।
গিয়াস উদ্দিন আরও জানান, গ্যাসের দোকান থেকে মানুষের বাসায় গ্যাসের বোতল ডেলিভারি দিয়ে সারাদিনে ৮০-১০০ টাকা আয় হয়। কোনোদিন খালি হাতেও ফিরতে হয়। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি আর প্যাডেল মারতে পারেন না বলেও জানান তিনি।
মেসার্স সিদ্দিক এলপিজি গ্যাস স্টোরের মালিক সিদ্দিক হোসেন জানান, দুইজন রিকশাচালক বাসায় এলপিজি গ্যাস ডেলিভারি করে। কোনোদিন ১০০ টাকার মতো ভাড়া পায় তারা। এলপিজি গ্যাস বিক্রি না হলে তাদের ইনকামও বন্ধ থাকে। ব্যাটারিচালিত রিকশা হলে যাত্রীর ভাড়াও পেতেন তিনি।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ