ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কচুয়ায় ৪৮ বছর পর ক্ষিরাই নদী খনন

প্রকাশনার সময়: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৫:০৬ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৫:০৮

চাঁদপুরের কচুয়া ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা অংশে অবস্থিত ক্ষিরাই নদী ১৯৭৪ সালের পর দীর্ঘ ৪৮ বছর পর নতুন করে খনন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সাড়ে ৯ কিলোমিটার নদী খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে কয়েক হাজার কৃষক সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে। চলতি মাসের শেষের দিকে নদীর মতলব দক্ষিণ উপজেলা অংশে আরো ১১ কিলোমিটার নদী খনন কাজ শুরু হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর আওতায় সমগ্র বাংলাদেশে খাল, জলাশয় খননের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ খননের ফলে দেশের কৃষি ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। এসব পুন:খননের মাধ্যমে ছোট নদী ও খালে পানি ধারন ক্ষমতা বাড়বে। ইরিগেশনের সময় কৃষি জমিতে সেচ দেওয়া সহজ হবে। একই সাথে ভূ-গর্ভস্থ পানির পর্যাপ্ত ব্যবহারের পাশাপাশি বাস্তুসংস্থানের পুনঃজীবন সম্ভব হবে। এর ফলে পরিবেশের উপর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এই প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২০২১ এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছর দুইবারে কচুয়া উপজেলার সাচার বড় ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু করে কচুয়া ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা জামতলা পর্যন্ত নদী খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে আর্থিক বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি টাকা।

কচুয়া সাচার ইউনিয়নের সাউপাড়া গ্রামের কৃষক ফজলু মিয়া জানান, ১৯৭৪ সালে এই নদী খনন হয়েছে। এরপর আর খনন হয়নি। এখন আবার দুই বারে খনন করা হয়েছে। এখন নদী গভীর হয়েছে। বড় বড় নৌকা আসতে পারবে। আমরা ধান, পাট, ভুট্টাসহ মৌসুমী ফসল করা সম্ভব হবে। পানির কোন সংকট থাকবে না।

সুয়ারুল দীঘির পাড় এলাকার কৃষক আবু ইউসুফ প্রধান জানান, নদী কেটে গভীর করায় পানি বেড়েছে। মাছের বিচরণ বেড়েছে। ফসলের জন্যও অনেক ভাল হবে।

একই এলাকার কৃষক আব্দুল হক বেপারী ও দুলাল মিয়া জানান, নদীতে চর পড়েছিল। এখন প্রায় ১২-১৫ হাত গভীর হয়েছে। দুইপাড়ের গ্রামগুলোর সব কৃষকই এখন সুবিধা পাবে। পানির কোন সংকট হবে না। বর্ষা শেষে পানি দ্রুত নেমে যাবে।

তারা আরো জানান, শুধুমাত্র আমাদেরই গ্রাম নয়, পাশবর্তী উদান, চিনাইয়া, আটমমুড়, টমলপুর, ভটিচিনিয়া, মধুপুর ও দীঘিল গাঁও গ্রামের হাজার হাজার কৃষক নদী খননের সুবিধা ভোগ করবে।

সম্প্রতি ক্ষিরাই নদী খননের বাস্তব চিত্র পরিদর্শন করেছন কুচয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খননের জন্য যে ডিজাইন করেছে তা ঠিক আছে। কাজের গুনগত মান অনেক ভাল। তবে কাজ করতে গিয়ে স্থানীয়দের পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে ডিজাইন ঠিক রাখা যায় না। তবে তাদের কাজের পরিমাণের উপর বিল পাবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান ভূইয়া বলেন, ক্ষিরাই নদী খনন কাজের কচুয়া অংশ শেষ হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে কচুয়া জামতলা থেকে মতলব অংশের কাজ শুরু হবে। জামতলা থেকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়ের গাঁও পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার খনন কাজ ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ এর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। তবে খুব শীগগীরই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে এবং তাদের সেই প্রস্তুতি আছে। এই ১১ কিলোমিটার নদী খনন কাজের বরাদ্দ প্রায় ১০ কোটি টাকা।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ