জামালপুরের মেলান্দহে বসতবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও পয়োনিষ্কাশনের জন্য পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে ৪ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ড্রেন নির্মাণ করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। এ ড্রেন নির্মাণে ব্যায় হয়েছে ৮ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
তবে পৌরসভার শিমুলতলা থেকে পোস্ট অফিস পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার জায়গায় ড্রেনের মাঝখানে পল্লী বিদ্যুতের ২৬টি খুঁটি রেখে নির্মাণ কাজ শেষ করায় একমাস যাবৎ ড্রেনটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
মেলান্দহ পৌরসভার বাসিন্দা মুকুল মিয়া বলেন, এই যে ড্রেনটাতে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করতাছে। শতকরা ৯০টা খুঁটি হইলো ড্রেনের মাঝখানে। এতে সরকারের ক্ষতি হইলো না। দুই দিন বাদেই ড্রেনটা বন্ধ হয়ে যাবো গা ময়লা আটকে। তখন অবস্থাটা কি হবো। তখন পাবলিকে গন্ধের জন্যে থাকতে পারবো না।
শিমুলতলা এলাকার বাসিন্দা মুকুল মিয়া বলেন, এটা অপরিকল্পিত উন্নয়ন। আমাদের প্রতিটা ড্রেনের মাঝেই খুঁটি পড়ছে। খুঁটিটা ড্রেন করার আগেই যদি সংস্কার করতো। তাহলে ভালো হতো। এখন ড্রেন করার পর খুঁটি হয়ে গেছে। এখন সরকারের অনেক টাকা লস হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজ্জাক বলেন, ড্রেন হচ্ছে আড়াই ফিট। এখানে এক ফিট খুঁটি আছে। আসলে এটা দিয়ে আমাদের কোনো কাজ হয়তাছে না। এত টাকার সম্পদ। এডা দিয়ে আমাদের কোনো কাজ হইতাছে না। আমাদের এই খুঁটি সরাই দিবো। খুঁটি সরাই দিলে আমাদের সব ময়লা পানি সুন্দরমতো বের হয়ে যাবে। এটাই আমরা চাই।
মেলান্দহ পৌরসভার বিশিষ্ট নাগরিক নুরুল আমিন বলেন, এখন যদি ২৬টি খুঁটি সরাতে হয় তাহলে আবার ড্রেন ভাঙ্গতে হবে। পরে আবার ড্রেন সংস্কারের জন্য সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করতে হবে। এটি আসলে নয়ছয় উন্নয়ন।
জামালপুরের বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, আমরা যতটুকু জানি। প্রতিটি নির্মাণ কাজে এমন ড্রেন বা গাছ থাকলে সেসব সরানো বা অপসারণের জন্য বরাদ্দ থাকে। মেলান্দহের এই খুঁটিগুলো সরানোর জন্যও নিশ্চয় বরাদ্দ আছে। তাহলে সেই বরাদ্দ কোথায় গেলো?
খুঁটি সরানোর বিষয়ে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মেলান্দহ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. নুরুল আমিন মোবাইল ফোনে জানান, জনস্বাস্থ্য অধিদফতর আমাদের লিখিতভাবে কিছুই জানায়নি। মৌখিকভাবেও একবারের জন্য বলেনি। তারা প্রথমে আমাদের চিঠি দিবে। এরপর খুঁটি সরানোর জন্য যে ব্যায় সেটির একটি চাহিদা তাদেরকে পাঠাবো। তারপর তারা সেই চাহিদার বিল পাস করলেই আমরা খুঁটি সরানোর কাজ শুরু করবো। এটি একটি প্রক্রিয়া। শুধু মুখে মুখে বললেইতো হয় না।
আর এসব বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি জামালপুরের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ