পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও শিক্ষকদের লাঞ্চিতের অভিযোগ করেছেন তারা।
শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাড়া বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করাসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত। কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে তাকে নানা হয়রানি ও হুমকি এমনকি মারধরও করেন। তিনি সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হককে মারধর ও লাঞ্চিত করেছেন। সেই ঘটনার তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতে শিক্ষকদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।’
প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তারা বলেন, ২০১৯, ২০২০, ২০২১ সালের বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ লাখ টাকার কোন হদিস নেই। প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্কুলের জায়গায় নিজের গোয়াল ঘর তৈরি করে গরুর ব্যবসা করছেন। বিদ্যালয়ের জমিতে মার্কেট নির্মাণে প্রায় ১ কোটি টাকা এবং মার্কেটের ভাড়ার প্রায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও মার্কেটের দোকান বিক্রি, পুকুর ভরাট, স্কুল মাঠে মেলার টাকা, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের ৫০ লাখ টাকা, গেট তৈরির ২০ লাখ টাকা, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায়কৃত লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি স্কুলের ভবন নির্মাণের প্রায় ২০ হাজার ইট নিয়ে নিজের বাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করেছেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আলীকে দলীয় প্রভাবে সরিয়ে দিয়ে জুনিয়র শিক্ষক (কম্পিউটার) আনোয়ার হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন। ৭ বছর ভারপ্রাাপ্ত থাকা অবস্থায় জৈষ্ঠতা লংঘন করে প্রধান শিক্ষক হন। তিনি প্রধান শিক্ষক এবং কম্পিউটার শিক্ষক পদে বেতন গ্রহণ করেছেন।
শিক্ষকরা বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা দেওয়ার কথা বলে বেতন লেজারে সই করিয়ে নিলেও তাদের কোন টাকা পয়সা দেন না। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির রেজুলেশনও আটকে রেখেছেন। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষকদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়ের সভাপতিও তার কাছে অসহায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক আব্দুল হক, আসাব উদ্দিন, আকমল হোসেন, বাবুল কুমার কর্মকার, মোছা. শবনম মোস্তারী, গোলাপী রানি সরকার, শহিদুর রহমান, জিলাল উদ্দিন, আব্দুস শুকুর, কামাল হোসেন, সুজন আলী খান, ছাবিনা ইয়াসমিন ও জামাল হোসেন।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ