ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘুষ চেয়ে ধরা এসআই, থানা থেকে প্রত্যাহার

প্রকাশনার সময়: ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৮:২১

রাজশাহীর এক এসআই আসামির কাছ থেকে মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে ঘুষ নিয়েছেন। এরপর থানার ওসি’র নামে আবারো ঘুষ চেয়েছেন। কৌশলে তার এই তথ্য রেকর্ড করেছেন আসামি। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসআই’র এই ঘুষ লেনদেনের কথা ছড়িয়ে দিয়ে করেছেন ভাইরাল। আর তাতেই ধরা খেলেন এসআই। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়ায় থানায়।

রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমানের জন্য ঘুষ চেয়ে বিপাকে পড়েছেন একই থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়ারেশ। তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) পলাতক আসামিদের কাছে এসআই ওয়ারেশের ঘুষ চাওয়ার একটি অডিও ফাঁস হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ওয়ারেশকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।

ওই অডিওতে মামলার একাধিক আসামির কাছ থেকে ওসির নামে ঘুষ চাইতে শোনা গেছে। পরে সেটি রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের কানেও পৌঁছায়। এরপরই মহানগরীর রাজপাড়া থানার এসআই ওয়ারেশকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

ভাইরাল হওয়া একাধিক অডিও ক্লিপের একটি থেকে শোনা যায়, রাফি নামে কোনো এক মামলার পলাতক আসামির কাছ থেকে ঘুষ দাবি করেন এসআই ওয়ারেশ। রাফি এসআইকে বলেন, গ্রেফতার করা হবে না আশ্বস্ত করায় তিনি কোথাও পালাননি। সবাই পলাতক জানলেও তিনি বাসায় অবস্থান করছেন। এ সময় এসআই বলেন, রাফিকে গ্রেফতার করা হবে না। ওসির জন্য যেন ‘বাজেট’ রাখা হয়।

পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তিনি রাফির কাছ থেকে ২ হাজার ৪০ টাকা নেন। কিন্তু দাবি অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকা না দেওয়ায় গালি দেন এসআই। তখন ওই আসামি একদিন পর বাকি তিন হাজার টাকা দেবেন বলে জানান। পরে নিজের সঙ্গে থাকা ফোর্সের চা-নাস্তার টাকাও চান এসআই ওয়ারেশ।

আরেকটি অডিওয় শোনা যায়, আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে থানার ডিউটি অফিসারের কাছে কাগজ (রিকল) জমা দিয়েছেন। কিন্তু এসআই ওয়ারেশের কাছে কাগজ না দেওয়ায় তিনি আসামিকে গালি দেন। আরও একটি অডিও আরেক মামলার আসামির সঙ্গে ওয়ারেশের কথোপকথন শোনা যায়। সবগুলো অডিওতে টাকা চাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। আসামিরা কাঁচা টাকা না দেওয়ায় তিনি সবাইকে গালি-গালাজও করেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর রাজশাহী মহানগরীর আইডিবাগান পাড়া এলাকার সম্রাট নামে এক যুবককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান ওয়ারেশ। পরে তিনি আসামিদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এবং ওসির নামে ঘুষ দাবি করতে শুরু করেন। বিভিন্ন বাহানায় অনেকের কাছ থেকে টাকাও নেন। যে কারণে আসামিদের গ্রেফতারও করেননি তিনি। পরে গত ৭ নভেম্বর আসামিরা আদালত থেকে জামিন পান।

রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি কমিশনারের নজরে আসায় এসআই ওয়ারেশকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ