ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভবন নির্মাণে দুই প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্ব, শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশনার সময়: ০৬ নভেম্বর ২০২২, ২০:৫১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মধ্যে জায়গা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস যেখানে আইসিটি ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেই জায়গাটি বিআরডিবির জায়গা বলে দাবি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় রোববার আদালত থেকে দেওয়া এক আদেশে বিবাদী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

এদিকে ভবন নির্মাণের জন্য ওই জায়গাতে ইতোমধ্যেই গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৪টি গাছ কেটে ফেলার বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ১৫ অক্টোবর এক নিলামে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসব গাছ বিক্রি করে দেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের ভবন যেখানে অবস্থিত সেটিকে সিও অফিস বলা হয়। প্রধান ফটক হয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এর উত্তর-পশ্চিম দিকে বিআরডিবির ভবন। ঠিক পিছনেই খালি জায়গাতে গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি ভবন নির্মাণের বরাদ্দ আসে। এরই আলোকে বিআরডিবি কার্যালয়ের পিছনের ছয় শতক ভূমিতে নির্মাণ কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ওই জায়গায় থাকা গাছ নিলামে বিক্রি করা হলে সংশ্লিষ্টরা কেটে ফেলেন।

গত ২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিআরডিবির পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা করে উল্লেখ করা হয়, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস যেখানে ভবন নির্মাণ করতে চাইছে সেটি বিআরডিবির। এ বিষয়ে সব ধরণের কাগজপত্র থাকার পরও ভুলক্রমে বিএস খতিয়ানে কৃষি উন্নয়ন সংস্থার নামে লিপিবদ্ধ হয়। এ বিষয়ে একটি মামলাও চলমান। এ অবস্থায় সেখানে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বিষয়ে মৌখিকভাবে বাঁধা দিলেও তারা প্রস্তুতি চলমান রাখে।

গত রোববার আদালত এক আদেশে বিবাদী হিসেবে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছেন। অন্যথায় একতরফা শুনানি হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সমবায় সমিতির লিমিটেড (বিআরডিবি)-এর চেয়ারম্যান মো. আবু কাউছার বলেন, ‘উন্নয়ন কাজে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের জায়গা নিতে হলে তো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। এক্ষেত্রে এ কাজটি করা হয়নি।

সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘জায়গাটি আমাদের কার্যালয়ের নামে রেকর্ড আছে ও সকল কাগজপত্রও আছে। ওই জায়গার গাছ কাটার সময় নিষেধ করা হয়। কিন্তু তাতে কাজ না হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে সেখান থেকে আসা নির্দেশনা মতো আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য বলেন, ‘এখানে আমার কোনো অফিস হচ্ছে না। আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি কার্যালয়ের ভবন হবে। উপজেলা পরিষদ এটার বাস্তবায়ন করছে। এখন কেন সেখানে আমাকে বিবাদী করা হলো আমি বুঝতে পারছি না।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘জায়গাটির মালিক উপজেলা পরিষদের। এ সংক্রান্ত কাগজপত্রও আমাদের কাছে আছে। এখন তারা কেন তাদের জায়গা বলছে, সেটা তারাই বলতে পারবে।

নয়াশতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ