হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম অনুষ্ঠান রাস উৎসব। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী শ্রী কৃষ্ণ এই সময় রাস লীলা করেছিলেন। আর এই উৎসবকে ঘিরে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সেজে উঠছে নতুন রুপে। প্রতি বছর বাংলা বছরের কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে কুয়াকাটা রাধা কৃষ্ণ মন্দিরে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়।
এই রাস মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে গত দুই বছর করনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সীমিত পরিসরে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে। টানা দুই বছর পরে এই অনুষ্ঠানে কোনো অসম্পূর্ণতা রাখতে চান না আয়োজকরা। রোববার (০৬ নভেম্বর) রাতে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গলবার ভোরে পূর্ব আকাশে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে পূণ্য স্নান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে রস লীলার মূল আনুষ্ঠানিতা। মঙ্গলবার প্রত্যুষে সমুদ্র স্নানের পর পূন্যার্থীর ফিরে যাবেন গন্তব্যে। এদিকে রাস মেলা অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার দুই একদিন আগে থেকেই কুয়াকাটায় ভিড় জমতে শুরু করেছে পর্যটকদের।
কুয়াকাটা রাস উৎসবে যোগ দিতে আসা অনুশ্রী দাস বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের সাথে কুয়াকাটায় এসেছি। আগেভাগেই হোটেল রুম বুকিং দিতে হয়েছে। আমাদের দুইটি রুমের প্রয়োজনে ছিলো। কিন্তু পেয়েছি মাত্র একটি রুম। আমরা মন্দিরে আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবো। পরে যেই দিন পূণ্যস্নান হবে সেইদিন স্নান শেষ করে রাতে ঘোরাঘুরি করে পরের দিন বাড়িতে চলে যাবো।
ঢাকা থেকে আসা রেজোয়ান বলেন, রাস হিন্দুদের অনুষ্ঠান তবে সর্বপরি আমরা সবাই বাঙালি। এই রাস উৎসবের কথা অনেক শুনেছি। তাই এইবার চলে এসেছি। আমার ভালোই লাগছে।
রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক কাজল বরণ দাস জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে রাস মেলা উদযাপনে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি রোববার রাতে স্থানীয় রাখাইন মার্কেট মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে দেশের খ্যাতিমান শিল্পী বিন্দু কনার কনসার্ট রয়েছে সোমবার রাতে। সারা রাতে পদবলী কীর্তন ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, রাস মেলাতে আসন্য মানুষের নিরপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সেই সাথে সাদা পোশাকের গোয়ান্দা নজরদারিও রাখা। উৎসব সফল করার লক্ষ্যে আমাদের সজাগ দৃষ্টি থাকবে।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বাংলা জানান, রাস উৎসব চলাকালীন আইন শৃংখালসহ সকল কিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। উৎসবে যাতে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ