ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাঁচতে চায় বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু সায়মা

প্রকাশনার সময়: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১৬:২৯
বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু সায়মা আক্তার

ময়মনসিংহের ত্রিশালে গত এক বছর আগে বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সাড়ে সাত বছর বয়সি শিশু সালমানের ছোট বোন ১৩ মাস বয়সি শিশু সায়মা আক্তার একই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দিন মজুর বাবা সজল মিয়া চিকিৎসার অভাবে তার ছেলে সালমানকে হারিয়েছেন। তিনি চান তার ছোট্ট মেয়েটিকেও যেন অকালে না হারাতে হয়। সঠিক চিকিৎসা করলে বেঁচে যাবে শিশুটি। দিন মজুর বাবার পক্ষে এই চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার সাখুয়া ইউনিয়নের গন্ডখোলা ফকিরবাড়ী এলাকার সজল মিয়ার ১৩ মাস বয়সী ছোট্ট মেয়ে সায়মা আক্তার এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

পরিবারের মাধ্যমে জানাযায়, ডাক্তার এ রোগের নাম বলেছেন স্কিন ক্যান্সার। এ রোগ প্রথমে শরীরে ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে সারা শরীরে তা ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথা হয় প্রচণ্ড।

সায়মার বাবা সজল মিয়া বলেন, এ বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার বড় ছেলে অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে চিকিৎসার অভাবে ৫ জানুয়ারী আমাদের ছেড়ে চলে যান। আমার মেয়ে সায়মার মত তার শরীরেও ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে সারা শরীরে তা ছড়িয়ে পড়ে। দিন মজুরের কাজ করে কোন রকম সংসার চালিয়ে ছেলের চিকিৎসা করতে পারি নাই। সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে নিজেদের সহায়সম্বল বিক্রি করে সন্তানকে বাঁচাতে পারি নাই। কারণ চিকিৎসা করতে অনেক দেরী হয়ে গেছে। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ আমার ছেলের চিকিৎসায় অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। তবে এখন ছোট্ট মেয়েটির শরীরেও ছোপ ছোপ দাগ দেখা দিয়েছে। সেও একই রোগে আক্রান্ত। এখন মেয়েটিকে সময়মত সঠিক চিকিৎসা করলে বেঁচে যাবে।

তিনি বলেন, আমি ছেলের চিকিৎসা করে নিঃস্ব। ছেলের মত মেয়েটিকে হারাতে চাইনা। সরকার যদি আমার মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সে আল্লাহর রহমতে বেঁচে যাবে। আমরা সারা জীবন তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবো।

বিরল রোগে আক্রান্ত সায়মার মা মাকসুদা বেগম বলেন, সালমানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার বারডেম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৭টি অপারেশন করা হয়। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন সালমানকে ভালো চিকিৎসা করালে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। ছেলেকে চিকিৎসা করাতে দেরী হয়ে যায়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি নাই।

সালমান যন্ত্রণায় সারা রাত কান্নাকাটি করত, কাউকে ঘুমাতে দিতো না। সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। আমার মেয়েও এই রোগে আক্রান্ত। সংসারে চার জন সদস্য, থাকার ঘর ছাড়া আমাদের আর কিছুই নাই। দিন মজুরের কাজ করে আমার স্বামী কোন রকম সংসার চালায়। চিকিৎসা করাবো কিভাবে। সন্তানের কষ্ট সহ্য হয়না তাই ডাক্তারের কাছেও নিয়ে গেছিলাম। চিকিৎসার জন্য যদি সমাজের বিত্তবান মানুষ সাহায্যে এগিয়ে আসলে মেয়েটি বেঁচে যাবে।

স্থানীয় মফিজ উদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, তার মেয়ের মত ছেলের শরীরেও এমন ছোপ ছোপ দাগ দেখা দিয়েছিল। ধীরে ধীরে সারা শরীরে তা ছড়িয়ে পড়ে। সজল মিয়ার ঘর ছাড়া কিছুই নাই। ছেলেকে ঢাকায় বহু বছর চিকিৎসা করে সব শেষ করে ফেলেছেন। মেয়েটির এখন ছোপ ছোপ দাগ শুরু হইছে। চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যেতে পারে। সে চিকিৎসার টাকা পাবে কোথায়। এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছেও যোগাযোগ করেছে। সরকার যদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাহলে মেয়েটি বাঁচতে পারবে।

স্থানীয় সাখুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার ফরিদ আহম্মেদ শ্যামল বলেন, সজল মিয়ার ছেলে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ছেলেটি এ রোগ নিয়ে অনেক যন্ত্রনাভোগ করেছে। তার চিকিৎসার জন্যও আমরা এলাকার পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছিলাম, বাঁচাতে পারিনি। আমি মেম্বার হিসেবে তার মেয়ের জন্য যতটুকু করতে পারি করবো। আমাদের সাহায্য দিয়ে এ চিকিৎসার কিছুই হবে না। বৃত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকার যদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে এই অভাবি পরিবারটি মেয়েটিকে বাঁচাতে পারতো।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা-

সজল মিয়া (সায়মার বাবা)

০১৭৩৭৫০৫০৬৫ (বিকাশ)

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ