ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে পাবনার চরাঞ্চলের কলা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আকস্মিক ঝড় বাতাসের তাণ্ডবে প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির কলার বাগান তসনস হয়ে গেছে। ধরন্ত কলাগাছগুলো উপরে ভেঙে পড়েছে ক্ষেতেই। দীর্ঘ মেয়াদি এক ফসলের ফলন নষ্ট হওয়াতে কৃষকদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কলাচাষিরা সরকারে নিকট প্রণোদনা দাবি করেছেন।
রোববার (৩০ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের শেষ প্রান্ত পাবনা-কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তবর্তী চরভবানীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত কলার বাগান। মাটিতে নেতিয়ে পরা এসব কলাগাছ কেটে পরিস্কার করছে কৃষকরা। চরভবানিপুর, খাসচর ও গঙ্গাধরদিয়া গ্রামের বিশাল চর অঞ্চলের যেদিকে চোখ যায় শুধু কলার বাগান। এই অঞ্চলের উৎপাদিত কলা স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
কৃষকদের দেওয়া তথ্যমতে, প্রায় ১৫ কোটি টাকার কলাবাগানের ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে কৃষি বিভাগের দায়িত্বশীল কাউকে দেখা যায়নি।
চরভবানিপুর গ্রামের আবু তালেব, ফজলু, শামছু প্রাং, হাসান আলীসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, বিভিন্ন সমিতি থেকে লোন আর ধারদেনা করে এবং নিজেদের জমানো অর্থ দিয়ে লাভের আশায় কলা চাষ করে ছিলেন তারা। জমি থেকে নষ্ট কলাগাছ অন্যত্র সরিয়ে পূণরায় জমি চাষাবাদ করবে সেই অর্থও তাদের কাছে নেই। তাই সরকার ও কৃষি বিভাগের নিকট প্রণোদনার দাবি করেছেন এই অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আব্দুস সাত্তার জানান, পাবনা কৃষি বিভাগকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সরকারের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে আসেন নাই। দূর্গম চর অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কলা চাষিরা অসহায়ের মতো চেয়ে আছেন সহযোগিতার জন্য। তাদের এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাবনা কৃষি বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছি, সেটি মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তালিকা প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সরকারি সহযোগিতা প্রদানের জন্য চেষ্টা করা হবে। বিগত দিনগুলোতেও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা ও সহযোগিতা করা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ