রাজধানীর বেশিরভাগ স্থানের চিরাচরিত রূপটি সন্ধ্যা নামলেই বদলে যায় অন্য রূপে। সন্ধ্যার পর থেকে চলে একদল নারীদের প্রস্তুতি। অন্ধকার বাড়ার সাথে সাথে এদের তৎপরতা বাড়ে।
মূলত রাজধানীতে কয়েক ধরনের যৌনকর্মী রয়েছে। এদের মধ্যে জায়গা ও স্থান ভেদে রয়েছে পরিবর্তন। এদের মধ্যে একদল অবস্থান নেয় বিভিন্ন বাসা-বাড়ি বা আবাসিক হোটেলে। আরেক দল ভাসমান।
রাজধানী ঢাকায় ভাসমান যৌনকর্মীদের অন্যতম ঠিকানা সংসদ ভবন এলাকা, কারওয়ান বাজার, মতিঝিল, গুলশান, বনানী, হাতিরঝিল, তেজগাঁও, ক্যান্টনমেন্ট, বিজয় সরণি, বিমানবন্দর মহাসড়ক। তবে সম্প্রতি রাজধানীর এইসব রাস্তায় যৌনকর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে।
বিমানবন্দর এলাকায় পূর্ণিমা (ছদ্মনাম) বলেন, হতাশাগ্রস্ত হয়ে সম্প্রতি তিনি যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়েন। তিনি জানান, আমার পরিবার মনে করে আমি নাইট ডিউটিতে চাকরি করছি। কিন্তু, আসলে আমি কী করি, সেটা জানলে তারা হতবাক হয়ে যাবে। কিন্তু, অর্থনৈতিকভাবে আমার পরিবারকে সমর্থন করতে এটা ছাড়া আমার কাছে আর কোনো বিকল্প ছিল না।
এ পেশায় সদ্য আসা অনেকেই দারিদ্র্যের কষাঘাতে বিপর্যস্ত। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কম ও বিশেষ কোনো দক্ষতাও নেই। সেই কারণেই তারা যৌন পেশায় আসতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান।
মূলত রাজধানীর বিভিন্ন সড়কঘেঁষে কোমরসম উচ্চতার প্রাচীরের সাথে ছোট ছোট গাছে কাপড় টেনে ঘর তৈরি করে ওরা। আর সে ঘরেই চলে রাতভর দেহ ব্যবসা।
৩৫ বছর বয়সী খাদিজা (ছদ্মনাম) জানান, তালাকপ্রাপ্ত খাদিজার ৩ সন্তান রয়েছে। এর আগে তিনি স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন, যেখানে তিনি বছরে ৮ থেকে ৯ মাস কাজ করতে পারতেন। বৈশ্বিক মহামারীর কারণে তিনি রাজধানীতে আসেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু, তিনি কোনো কাজ পাননি। পরিবার ও ৩ সন্তানের কথা বিবেচনা করে বাধ্য হয়েই তিনি এ পেশায় আসেন।
বিমানবন্দর এলাকায় ৩০ বছর বয়সী ভাসমান যৌনকর্মী কনিকা (ছদ্মনাম) বলেন, শ্যামলীতে এক অফিসে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে জেনেছি, ঢাকায় এখন আমাগো মতো ৪০ হাজার নঢী (যৌনকর্মী) রাস্তায় কাজ করে। তবে রাজধানীতে যৌনকর্মীর সঠিক সংখ্যা কত কিংবা তা বেড়েছে কি না, এ সংশ্লিষ্ট কোনো হালনাগাদ পরিসংখ্যান দিতে পারেনি ভাসমান যৌনকর্মীদের কল্যাণে কাজ করা সংগঠনগুলো।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ