ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জনবল সংকটে ধুঁকছে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

প্রকাশনার সময়: ২৮ অক্টোবর ২০২২, ১৮:০৮

সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবলের অভাবে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত নীলফামারীর জলঢাকার মানুষ। ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। জনবলের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যন্ত্রপাতি। চিকিৎসার আধুনিক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও রোগী নিয়ে যেতে হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাই সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার চার লাখের বেশি মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

জানা যায়, উপজেলার এই ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৩৩ চিকিৎসকের স্থলে রয়েছে ২০ জন। ২০ জন চিকিৎসক রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। অপারেশন থিয়েটারে সার্জারি এবং এনেস্থেশিয়া কনসালটেন্ট না থাকায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। গাইনি ও সার্জিক্যাল স্পেশালিস্টের পদ শূন্য থাকার কারণে সিজারিয়ান অপারেশনের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকায় রোগীরা পরেন ভোগান্তিতে। অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিনটিও অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ডেন্টাল ও চক্ষু রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও নেই চিকিৎসা সামগ্রী। হাসপাতালের নতুন ও পুরাতন দুটি সরকারি এ্যাম্বুলেন্স থাকা সত্বেও সেগুলো বর্তমানে নষ্ট হয়ে পরে আছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৩ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ২০ জন, নার্স ৩৪ জনের স্থলে ৩৩ জন, ৩য় শ্রেণির স্টাফ ১০৩ জনের স্থলে ৬৬ জন, ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ২৩ জনের স্থলে ১৮ জন, সিএইচ সিপি ৪৩ জনের স্থলে ৪২ জন ও পরিচ্ছন্নকর্মী ৫ জনের পদ থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ১ জন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানুল কবীর বলেন, বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যেও সরকার কর্তৃক যখন যে নির্দেশনা আসে তখন সেটি যথাযথ কার্যকর করার মাধ্যমে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হয়। প্রতিদিন ১শত জনের অধিক রোগী সেবা নেন এবং বর্হিবিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৪'শত রোগীর জরুরী বিভাগে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। জনবল সংকটের ফলে সেবা প্রদান করা কষ্টসাধ্য হয়। জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে বিশেষত চিকিৎসকের সংকট, পদ থাকলেও পদে পদায়নের অভাব, জেনারেল সার্জারী ডাক্তারের শুন্যতার কারণে সিজারিয়ান সেকশন ও সেজর জেনারেল সার্জারী বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব ও স্থানীয় কিছু দালাল সহ চোরদের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ সব বিষয় সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের নিকট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে'র চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ(ইপিআই) রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ হাসপাতালটিতে যেভাবে জনবল থাকার কথা সেভাবে না থাকায় নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি মেশিন থাকলেও সংস্কারের অভাবে তা পরে আছে। সেই সঙ্গে কনসালটেন্ট ডাক্তার নেই। টেকনিশিয়ান চিকিৎসক না থাকায় বাহির থেকে এক্সরে করানো হচ্ছে।

জনবল সংকটের যে সমস্যা এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের যে সমস্যা রয়েছে তা উত্তরনে সরকার সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আর্কষন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ সুধী সমাজের ব্যক্তিবর্গরা।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ