অভাব-অনটনের সঙ্গে লড়াই করে চলছে তাদের সংসার। বাবা সাইদুর ছোট বেলায় ফেলে গেছেন, মা মাবিয়া ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। দাদীর সাথে থাকেন দুই ভাই ওমর ও আলিফ। দাদীর আয়ে সংসারে খরচ চালানো দায়, তাই পৌর সদরে ডালু পট্টির শিশু কিশোররা সবজি বিক্রি করে জোগাচ্ছেন সংসারের খরচ। ওদের এই বাড়তি আয়ে অভাবের সংসারে এখন হাসি ফুটেছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, তাড়াশ ঈদগাহ মাঠে প্রতিদিনই কাঁচা সবজির দোকান বসে। আর এসব দোকানে গেলে দেখা মিলবে কাঁচামরিচ, কচু শাক, কচুর মুখি, কলার থোড়, আলু শাক, কলমি শাক, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, লাউ শাক, পুঁই শাক, চিচিঙা, কাঁচা ও পাকা পেঁপে, কাঁচকলা, জাম্বুরা সহ তাজা শাক-সবজি। সবজি বিক্রেতাদের মতই পসরা সাজিয়ে বসে এসকল শিশু কিশোরেরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের বেচাকেনা। প্রতিদিন এসব তাজা সবজি, অফিস ফেরত লোকজন আর স্থানীয়রা কেনেন।
শিশু সবজি বিক্রেতা ওমর ও আলিফ বলেন, আমরা দুই ভাই আগে স্কুলে যেতাম। সংসারের অনটনের জন্য এখন আর যাই না, সবজি বিক্রি করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছি।
ওমর ও আলিফ এর অবিভাবক তাদের দাদী ডলি। তিনি বলেন, ওমর ও আলিফ যখন ছোট তখনই তাদের বাবা ওদেরকে ফেলে অন্যত্রে গিয়ে বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন। জীবিকার তাগিদে তাদের মা ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। ওরা আমার কাছেই বড় হচ্ছে। ওদের জীবন যাপনের নূন্যতম চাহিদাও পূরণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে ছিলাম কিন্তু এক/দুই ক্লাস পরার পর সেটাও চালাতে পারিনি। সংসারের অনটনে স্কুল ছেড়ে সবজি বিক্রি করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছে। যেহেতু আমারও সামর্থ নাই তাই কি আর করা!
সচেতন মহল মনে করেন, যে বয়সে এই সব ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া আর খেলাধুলা নিয়ে মেতে থাকবার কথা, ঠিক সেই বয়সে এসব শিশু কিশোর নেমেছে রুজির সন্ধানে। তবু জাতির ভবিষ্যত এসব শিশুরা অন্য পথে না গিয়ে সৎ পথে উপার্জন করার চেষ্টা করছে। তারা বিত্তবানদের কাছে আবেদন করে বলেন, এসব শিশুদের যদি একটু সহযোগিতা করা হয়, তাহলে হয়তোবা এই সকল শিশুরাও একদিন দেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ