ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বাহাদুরপুর ফিরোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই শিক্ষকরা ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। এই অবস্থায় যেকোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন তারা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয় বাহাদুরপুর ফিরোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথম দিকে টিনশেড ঘরে পাঠদান হলেও ১৯৯৯ সালে বিদ্যালয়ের দ্বিতল ফাউন্ডেশনের একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজ শেষে ভবনের তিনটি কক্ষে পাঠদান চালু হয়। কক্ষ সংকটের কারণে ভবনের সিঁড়ি কক্ষে টিনের চালা দিয়ে বানানো হয় অফিস কক্ষ। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ চারজন শিক্ষক রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৭ জন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের পাঠদান কক্ষের ছাদ, বারান্দা ও দেয়ালের বিভিন্ন অংশের পলেস্তার খসে পড়ছে। ফাটল দেখা দিয়েছে দেয়াল, ভিম ও ছাদে। ছাদ ও ভিমের পলেস্তার খসে রড বেরিয়ে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় তিনটি পাঠদানের কক্ষের মধ্যে একটি কক্ষে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় ২০২১ সালে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের টাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে এক কক্ষ বিশিষ্ট আধাপাকা পাঠদান কক্ষ নির্মাণ করা হয়।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা বলেন, ভবনে ফাটল দেয়ায় পাঠদানের সময় বেঞ্চে বসে থাকতে ভয় করে। অনেক সময় ছাদের পলেস্তার খসে শরীরে পড়ে। তাই সবসময় আমরা আতঙ্কে থাকি।
অভিভাবক আব্দুল গনি বলেন, বিদ্যালয়য়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি। দুর্ঘটনার শঙ্কায় অনেক অভিভাবক ভয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পরিবেশে পাঠতানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলহাস উদ্দিন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় কাজ করে। তারা পাঠদানে মনোযোগী হতে পারে না। বিষয়টি শিক্ষা অফিসে জানানো হয়েছে। তবে ভবন নির্মাণে এখনো কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে পাঠদান বিরত রয়েছে। পাঠদানের জন্য বিদ্যালয় মাঠে নতুন একটি কক্ষ ভবন করা হয়েছে। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষা কমিটির সুপারিশ সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি- এই অর্থ বছরেই ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
নয়া শতাব্দী/জেআইমন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ